তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ভৈরবে বিএনপির আনন্দ র‍্যালি, রাজপথে নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস

জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব প্রতিনিধি ॥
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘদিনের নির্বাসন শেষে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ব্যাপক উৎসবমুখর পরিবেশে আনন্দ র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে ভৈরবের রাজপথে ছিল চোখে পড়ার মতো জনসমাগম, স্লোগান ও উচ্ছ্বাস।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভৈরব উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির যৌথ উদ্যোগে এই আনন্দ র‍্যালির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচির শুরুতে ভৈরব উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওয়ার্ড থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পৌর শহরের আইস কোম্পানি এলাকায় জড়ো হন। পরে সেখান থেকে একটি বিশাল আনন্দ র‍্যালি বের করা হয়।
র‍্যালিটি আইস কোম্পানি এলাকা থেকে শুরু হয়ে ভৈরব পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড় অতিক্রম করার সময় পুরো এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শেষে র‍্যালিটি পৌর শহীদ মিনার চত্বরে এসে শেষ হয়, যেখানে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
র‍্যালি চলাকালে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নানা রঙের ব্যানার, ফেস্টুন ও দলীয় পতাকা বহন করেন। এ সময় তারা “তারেক রহমান আসছে, বাংলাদেশ হাসছে”, “তারেক রহমান বীরের বেশে, ফিরবে এবার বাংলাদেশে”, “গণতন্ত্রের বিজয়, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন”সহ বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তোলেন। স্লোগান ও করতালির মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীরা তাদের আবেগ ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
পৌর শহীদ মিনারে আয়োজিত আলোচনা সভায় উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন সুজনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী মো. শাহীন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি মজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি সাইফুল হকসহ আরও নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও সভায় ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং বিএনপির অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, জুলুম ও নিপীড়নের শিকার হয়ে দেশের বাইরে অবস্থান করতে বাধ্য হয়েছিলেন তারেক রহমান। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন শুধু একজন রাজনৈতিক নেতার দেশে ফেরা নয়, বরং এটি দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয়।
তারা আরও বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা স্বৈরাচারী শাসনের অবসান এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। দীর্ঘদিন ধরে ভোটাধিকার হরণ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হওয়া এবং বিরোধী মত দমনের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন চলছে, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন সেই আন্দোলনকে আরও বেগবান করবে।
বক্তারা দাবি করেন, তারেক রহমান কেবল বিএনপির শীর্ষ নেতা নন, তিনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির একজন গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশক। তার নেতৃত্বে দেশ নতুনভাবে পুনর্গঠিত হবে এবং একটি জবাবদিহিমূলক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা দেশের জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধে তারেক রহমানের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তারা বলেন, বিএনপি জনগণের দল এবং জনগণের শক্তিতেই বিএনপি আবারও দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
কর্মসূচি শেষে শান্তিপূর্ণভাবে আনন্দ র‍্যালি ও আলোচনা সভা সমাপ্ত হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুরো কর্মসূচি চলাকালে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নজরদারি রাখা হয়।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ভবিষ্যতেও ভৈরবসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ ও রাজনৈতিক কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post