ভৈরব প্রতিনিধি ॥
ভৈরবে সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘মানব কল্যাণে ভৈরব’-এর উপদেষ্টা পর্ষদ ঘোষণা ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার ২৯ সেপ্টেম্বর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অতিথিদের সংবর্ধনা জানানো ছাড়াও উপদেষ্টা পর্ষদের নবনিযুক্ত সদস্যদের হাতে বই উপহার দেওয়া হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, ভৈরবের তরুণ-তরুণীরা ঝড়-বন্যা, দুর্যোগ ও সামাজিক সংকটে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই কাজকে এগিয়ে নিতে সমাজের প্রবীণ, অভিজ্ঞ ও সুনামধন্য ব্যক্তিরা উপদেষ্টা পর্ষদের মাধ্যমে সংগঠনের বটগাছ হয়ে সহযোগিতা করবেন।
মানবতার জন্য এগিয়ে আসা
অনুষ্ঠানে সাধারণ সম্পাদক মো. নাসিম রিয়াদ বলেন, “মানবতার কল্যাণে মানুষ মানুষের জন্য”—এই মূলমন্ত্রকে ধারণ করেই মানব কল্যাণে ভৈরবের পথচলা শুরু। শুরু থেকেই দুর্যোগ মোকাবিলা, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, পথশিশুদের সহযোগিতা, চিকিৎসা সহায়তা থেকে শুরু করে মানবিক নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সংগঠনটি। সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করেই সংগঠনটি এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, উপদেষ্টা পর্ষদ ঘোষণার মাধ্যমে সংগঠনের কাঠামো আরও শক্তিশালী হলো। এতে তরুণ প্রজন্মের কাজের প্রতি মানুষের আস্থা ও সহযোগিতা আরও বাড়বে।
বক্তাদের অভিমত
বক্তব্যে ভৈরবের বিশিষ্ট এক শিক্ষাবিদ বলেন, সমাজের তরুণরা আজকে যদি মানবিক কাজে এগিয়ে আসে, তাহলে আগামী প্রজন্মও অনুপ্রাণিত হবে। “মানব কল্যাণে ভৈরব” কেবল একটি সংগঠন নয়, বরং মানবতার কল্যাণে এক আলোকবর্তিকা হয়ে উঠছে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বলেন—এই সংগঠন দুর্যোগে যেমন পাশে থাকে, তেমনি দৈনন্দিন সামাজিক সমস্যায়ও সচেতনতা গড়ে তুলছে। তিনি উপদেষ্টা পর্ষদকে সংগঠনের ‘অভিভাবক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, নতুন কমিটি গঠনের মাধ্যমে ভৈরবে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
বই বিতরণ ও সম্মাননা
অনুষ্ঠানে নবনিযুক্ত উপদেষ্টা সদস্যদের হাতে বই তুলে দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত অতিথিরাও সংগঠনের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। বক্তারা জানান, তরুণ প্রজন্মকে বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করতে এই উদ্যোগ একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করছে।
উপদেষ্টাদের মতামত
উপদেষ্টা পর্ষদের নবনিযুক্ত এক সদস্য বলেন, “তরুণরা যে নিরলসভাবে মানুষের জন্য কাজ করছে, আমরা শুধু ছায়া দিয়ে তাদের কাজকে আরও এগিয়ে নিতে চাই। এই সমাজ আমাদের সবার, তাই সামাজিক দায়িত্ব পালনে সকলে একসাথে থাকাই বড় শক্তি।”
আরেকজন বলেন, “অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোই প্রকৃত ধর্ম। মানব কল্যাণে ভৈরবের কার্যক্রম অন্য অনেক সংগঠনের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে।”
সংগঠনের ভূমিকা
‘মানব কল্যাণে ভৈরব’ এর সূচনালগ্ন থেকে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নেয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ বিতরণ, দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের শিক্ষাসামগ্রী প্রদান, শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, পথশিশুদের সহযোগিতা ও রক্তদানে উৎসাহ সৃষ্টির মতো কার্যক্রম ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
সদস্যদের দাবি, সংগঠনের কাজের পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। মানবিক মূল্যবোধই তাদের একমাত্র চালিকা শক্তি।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সভায় সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী দিনগুলোতে অসচ্ছল পরিবারের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবির, পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি, কিশোর-কিশোরীদের মাদক ও অপরাধ থেকে দূরে রাখতে বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে।
সমাপনী ঘোষণা
সভা শেষে উপস্থিত সকলে সংগঠনের অগ্রযাত্রায় পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। বক্তাদের মতে, “সবার দুঃখে পাশে থাকা—দিনে-রাতে মানব কল্যাণে ভৈরবের অঙ্গীকার।”
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মনে করেন, উপদেষ্টা পর্ষদ ঘোষণার মাধ্যমে সংগঠনটির কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে এবং ভৈরববাসীর আস্থা অর্জন করবে।
Post a Comment