ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে যৌথবাহিনীর অভিযানে দুই মাদককারবারি আটক

কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে র‌্যাব ও রেলওয়ে পুলিশের যৌথ অভিযানে ১০ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদককারবারিকে আটক করা হয়েছে। শনিবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ অভিযান চালানো হয়। আটককৃতরা হলো—ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উত্তর মৌড়াইল এলাকার মাহিন মিয়ার ছেলে রিপন এবং ভৈরব পৌর শহরের ঘোড়াকান্দা এলাকার আহমেদ আলীর ছেলে তানভির।

র‌্যাব-১৪ এর ভৈরব ক্যাম্প সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব ও রেলওয়ে পুলিশ যৌথভাবে ভৈরব স্টেশনে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে থামলে, সন্দেহভাজন দু’জন ট্রেন থেকে নামার চেষ্টা করে। র‌্যাব সদস্যরা তাদের গতিবিধি লক্ষ্য করে আটক করলে তাদের সঙ্গে থাকা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে বিশেষ কায়দায় রাখা পাঁচটি পোটলি থেকে ১০ কেজি গাঁজা উদ্ধার হয়।

অভিযান পরিচালনাকারী র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, আটক হওয়া রিপন ও তানভির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গাঁজা বহনের কথা স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, আজমপুর এলাকা থেকে এসব মাদক সংগ্রহ করে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। মাদকটি ঢাকার বিভিন্ন পাইকারি কারবারিদের কাছে সরবরাহ করা হতো।

অভিযানে ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাঈদ আহমদ ও তার নেতৃত্বাধীন পুলিশের একটি টিম অংশ নেয়। অভিযানের সময় স্টেশন এলাকায় উপস্থিত স্থানীয় যাত্রীরা ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন এবং যৌথবাহিনীর এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।

ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি জানান, আটক আসামিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। র‌্যাব বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করে এবং আসামিদের থানায় হস্তান্তর করেছে। এ ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

এদিকে, এলাকাবাসী মনে করছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন মাদক পাচারের অন্যতম রুটে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন যাত্রীবাহী ট্রেনের আড়ালে মাদক বহনের চেষ্টা করে চক্রের সদস্যরা। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযান থাকায় মাদককারবারিদের দৌরাত্ম্য কমছে বলে মনে করেন সচেতন মহল।

স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের নেতারা বলেন, ভৈরবের মতো ব্যস্ততম রেল জংশনে নিয়মিত অভিযান চালানো জরুরি। মাদক শুধু তরুণ প্রজন্মকেই ধ্বংস করছে না, এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও। তাই মাদক নিয়ন্ত্রণে যৌথবাহিনীর এ ধরনের পদক্ষেপ আরও জোরদার হওয়া দরকার।

অভিযান শেষে র‌্যাব কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোহিত কবির সেরনিয়াবাত বলেন, ভৈরবসহ আশপাশের এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। মাদক ব্যবসায় জড়িত যে-ই হোক, তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ সফল অভিযানের পর স্থানীয়রা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে তারা মনে করেন, শুধু অভিযান চালালেই হবে না, মাদকচক্রের মূল গডফাদারদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post