জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব প্রতিনিধি ॥
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার মানিকদী আলফাজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা কর্মী (আয়া) শরীফা খাতুনের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের পুরোনো মালামাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষিকা লিপি বেগম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)-এর কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়, বিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে অবস্থিত একটি পরিত্যক্ত শৌচাগার ভাঙার পর সেখানকার দুটি লোহার দরজা ও প্রায় ৯০০ কেজি পুরোনো রড শরীফা খাতুন কাউকে না জানিয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। এসব মালামালের আনুমানিক বাজারমূল্য ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বলে দাবি করেছেন অভিযোগকারী শিক্ষিকা। তিনি আরও উল্লেখ করেন, শরীফা চাকরিতে যোগদানের সময় বয়স সংক্রান্ত ভুল তথ্য প্রদান করেছিলেন।
অভিযোগের প্রসঙ্গে সিনিয়র শিক্ষিকা লিপি বেগম বলেন, “আয়ার চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই নানা সময়ে মালামাল আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়গুলো প্রধান শিক্ষককে জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেননি। এতে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগও ওঠে।”
এ বিষয়ে কয়েকজন শিক্ষক ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন। তাদের একজন বলেন, “শরীফা দরজা ও রড নিয়ে গেছে, তবে কাদের অনুমতিতে নিয়েছে তা আমি জানি না।” সহকারী শিক্ষিকা জোনাকি বেগমও একই কথা জানান।
অভিযুক্ত শরীফা খাতুন অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, “স্কুলের পুরোনো টয়লেট ভাঙার সময় আমি ৪০ হাজার টাকায় ইট কিনে নিয়েছিলাম। সেগুলো পরিষ্কার ও পরিবহন করতে অতিরিক্ত ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। পরে আমি স্টোর রুমে থাকা কিছু দরজা ও রড চাইলে প্রধান শিক্ষিকা আমাকে দেন। আমি কিছুই চুরি করিনি।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাহমিদা খাতুনও শরীফার পক্ষে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “গরিব মানুষ হওয়ায় অতিরিক্ত খরচের ক্ষতিপূরণ স্বরূপ কমিটির অনুমতি নিয়েই দরজা ও রড তাকে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি চুরি বা আত্মসাত নয়।”
তবে অভিযোগকারী পক্ষ বলছে, মালামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি, যা সন্দেহ তৈরি করেছে।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন জানান, “শিক্ষিকা লিপি বেগমের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ মনে করছেন অভিযোগটি ইচ্ছাকৃতভাবে আনা হয়েছে, আবার কেউ বলছেন, বিদ্যালয়ের সম্পদ রক্ষায় আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
Post a Comment