ভৈরবে মানব পাচার মামলার পলাতক ৫ নারী গ্রেপ্তার

ভৈরব প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মানব পাচার মামলার দীর্ঘদিনের পলাতক পাঁচ নারী আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে পৌর শহরের পঞ্চবটি এলাকার ফারুক মিয়ার ভাড়াটিয়া বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—ভৈরব পৌর শহরের জগন্নাথপুর আলুকান্দা এলাকার ফরিদা বেগম (৬৩), শিবপুর ইউনিয়নের জামালপুর মাইজহাটি গ্রামের শাহিদা আক্তার (৩১), শহীদা আক্তার সখী (৩৩), অনুফা বেগম (৫৬) এবং জনুফা বেগম (২৬)। এ সময় জনুফা বেগমের চার মাস বয়সী শিশু সন্তানও সঙ্গে ছিল।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ২০২১, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে ভৈরব থানা ও কিশোরগঞ্জ আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পর থেকেই তারা আত্মগোপনে ছিলেন। এজাহারে উল্লেখ রয়েছে, বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে তারা বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেন।

তিনি আরও বলেন, “তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালাই এবং মধ্যরাতে ওই বাসা থেকে পাঁচ নারী আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। এর মধ্যে জনুফা বেগম নামে এক নারীর চার মাস বয়সী সন্তান রয়েছে। শিশুটিকে মায়ের কাছ থেকে আলাদা করে রাখার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আদালত।”

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে ভৈরবসহ আশপাশের এলাকায় মানব পাচারচক্রের সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করছিলেন। তারা সহজ-সরল মানুষকে বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নিতেন। পরে হয় ভিসা দিতে ব্যর্থ হন, নয়তো প্রতারণার শিকারদের বিদেশে অবৈধ পথে পাঠানোর চেষ্টা করতেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনে করছে, এ ঘটনায় মানব পাচারচক্রের আরও সদস্যের নাম বের হয়ে আসতে পারে। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হবে এবং তদন্তের মাধ্যমে চক্রের মূলহোতাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

এদিকে সচেতন মহল বলছে, দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকা মানব পাচারকারীদের গ্রেপ্তার হওয়া প্রশংসনীয়। তবে এ চক্রের মূল গডফাদারদের আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে বিদেশে কর্মসংস্থানের আশায় প্রতারণার শিকার হওয়া পরিবারগুলোকে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post