ভৈরবে ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন

ভৈরব, কিশোরগঞ্জ | ১৬ আগস্ট ২০২৫:
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় ষড়যন্ত্রমূলক ধর্ষণ চেষ্টা মামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় শতাধিক বাসিন্দা। রোববার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুর্জয় মোড়ে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে চন্ডিবের গ্রামে বসবাসকারী ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী মো. বাবুল মিয়ার পক্ষে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বিপুলসংখ্যক এলাকাবাসী অংশ নেন।

‘মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে’ — এলাকাবাসীর অভিযোগ

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বক্তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসা সুনামধন্য ব্যবসায়ী বাবুল মিয়ার বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত ও মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করে হয়রানি করা হচ্ছে। তারা দাবি করেন, কালিপুর গ্রামের নাজমা আক্তার ওরফে পাশী, তার ছেলে সুমন মিয়া এবং কথিত পুত্রবধূ স্বপ্না বেগম এ ষড়যন্ত্রের পেছনে মূল ভূমিকা পালন করছেন।

বক্তারা বলেন, বাবুল মিয়া বেশ কয়েক বছর আগে তার শ্বশুরবাড়ি কালিপুর এলাকায় সম্পূর্ণ বৈধ প্রক্রিয়ায় একটি জমি ক্রয় করেন। জমির দলিল, দখল ও মালিকানা-সংক্রান্ত কাগজপত্র সবই আইনসম্মত এবং যথাযথ রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি ওই জমি জোরপূর্বক দখলের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

সামাজিক সম্মানহানি এবং জমি দখলের ষড়যন্ত্র

মানববন্ধনে বক্তারা আরও জানান, জমির মালিকানা হাতিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে নাজমা আক্তার ও তার পরিবারের সদস্যরা বাবুল মিয়ার বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে ভৈরব থানায় ধর্ষণ চেষ্টার মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। তারা বলেন, ঘটনাটি পুরোপুরি সাজানো, যার পেছনে রয়েছে একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।

মিথ্যা সাক্ষ্য নিয়ে ক্ষুব্ধ স্বাক্ষীরা

এই মামলার দুইজন স্বাক্ষী, কালিপুর ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মতি মিয়া এবং বাছির মিয়া ওরফে আহাদ মিয়া, মানববন্ধনে এসে বলেন—তাদেরকে জোর করে মামলায় মিথ্যা স্বাক্ষী করা হয়েছে। তারা বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি, ধর্ষণের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা। আমাদের নাম জড়ানো হয়েছে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে।” তারা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন।

বাবুল মিয়া ও পরিবারের আহ্বান

ভুক্তভোগী বাবুল মিয়া বলেন, “আমি একজন সাধারণ ব্যবসায়ী মানুষ। বহু বছর ধরে এই এলাকায় সততার সঙ্গে ব্যবসা করছি। হঠাৎ করে এমন মিথ্যা মামলা আমার সামাজিক মর্যাদা ও ব্যবসার ক্ষতি করছে। আমি এবং আমার পরিবার মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত।”

তার স্ত্রী সুলতানা বেগম সুপ্তি বলেন, “এই মামলার পেছনে যেই উদ্দেশ্যই থাকুক না কেন, এটি আমাদের পরিবারকে ভয়ংকরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন করে যেন মিথ্যা মামলাটি প্রত্যাহার করা হয় এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

মানববন্ধনে বক্তারা ভৈরব থানার পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান, যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলা তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা হয়। পাশাপাশি ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

তারা বলেন, এ ধরনের মিথ্যা মামলা শুধু একজন ব্যক্তির সম্মানহানিই করে না, বরং সমাজে আইন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থাও কমিয়ে দেয়। তারা প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের সহায়তা কামনা করেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post