ভৈরবে একসঙ্গে তিন নবজাতকের জন্ম, পরিবারে আনন্দ-উচ্ছ্বাস

জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব প্রতিনিধি ॥

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে একসঙ্গে দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক তরুণী মা। এ বিরল ঘটনাকে ঘিরে পরিবারে নেমে এসেছে আনন্দ-উচ্ছ্বাস।
প্রসূতি জোনাকি বেগম (২০) কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার বাহাদিয়া মনতালা গ্রামের সৌদি প্রবাসী সোহাগ মিয়ার স্ত্রী। তিনি ভৈরব উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদি গ্রামের তাহের উদ্দিনের কন্যা। গত রোববার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পৌর শহরের ইসরাত জাহান হাসপাতালে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একসঙ্গে তিন নবজাতকের জন্ম দেন তিনি। বর্তমানে মা ও সন্তানরা সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

দেড় বছরের দাম্পত্য জীবনে প্রথম সন্তান

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর আগে জোনাকি বেগমের সঙ্গে সোহাগ মিয়ার বিয়ে হয়। বিদেশে প্রবাসী স্বামীর সংসারে প্রথম সন্তান হিসেবে এ তিন নবজাতকের আগমন ঘটল। গত ২৭ আগস্ট প্রসববেদনা নিয়ে ইসরাত জাহান হাসপাতালে ভর্তি হন জোনাকি। চিকিৎসকরা তাকে কয়েক দিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখেন। পরে শারীরিক অবস্থার বিবেচনায় সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানো হয়।

পরিবারে আনন্দের বন্যা

তিন নবজাতকের আগমনে পরিবারে নেমে আসে খুশির জোয়ার। জোনাকির শ্বশুর সবুজ ভুঁইয়া আনন্দাশ্রু চেপে রাখতে না পেরে বলেন, “আমার ছেলে প্রবাসে থাকে। আল্লাহর অশেষ রহমতে একসঙ্গে তিনটি সন্তান পেয়েছি। আমাদের আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। নাতি-নাতনিদের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।”

এদিকে রোগীর ফুফু রাবিয়া খাতুন আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “আমরা কখনও ভাবিনি একসঙ্গে তিন সন্তান জন্ম নেবে। যখন দেখি দুই ছেলে ও এক মেয়ে আমাদের হাতে এসেছে, আনন্দে চোখ ভিজে যায়।”

চিকিৎসকদের সাফল্য

অস্ত্রোপচার পরিচালনাকারী চিকিৎসক ডা. এ.জেড.এম ফরহাদ আহমেদ জানান, প্রসূতির নিয়মিত আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষায় জানা যায় তার গর্ভে তিন সন্তান রয়েছে। তাই আগেভাগেই চিকিৎসক দল প্রস্তুত ছিল। তিনি বলেন, “একসঙ্গে তিন নবজাতকের প্রসব করানো ছিল একটি চ্যালেঞ্জ। তবে আল্লাহর কৃপায় মা ও সন্তানরা সুস্থ আছেন।”

স্থানীয়দের শুভেচ্ছা

একসঙ্গে তিন নবজাতকের জন্মের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা হাসপাতালে ভিড় জমায়। তারা নবজাতক ও মায়ের সুস্থতার জন্য শুভকামনা জানান।

Post a Comment

Previous Post Next Post