তাড়াইলে জনসংযোগে সরব জামায়াতের প্রার্থী ডা. জেহাদ খান

নিজস্ব প্রতিবেদক
তাড়াইল | ৮ আগস্ট ২০২৫

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কিশোরগঞ্জ-৩ (তাড়াইল-করিমগঞ্জ) আসনে ভোটারদের মন জয়ের জন্য সরব হয়ে উঠেছেন জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী প্রফেসর কর্নেল (অব.) ডা. জেহাদ খান। মাঠপর্যায়ে জনসংযোগে ব্যস্ত এই প্রার্থী রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতাল, ধানমন্ডির সিনিয়র কার্ডিওলজিস্ট হিসেবেও পরিচিত।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) জুমার নামাজের পর তাড়াইল উপজেলার ধলা ইউনিয়নের নয়াবাজার ও সেকান্দরনগর এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ পরিচালনা করেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তাড়াইল উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা মাসুদুর রহমান, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য আলমগীর হোসাইনসহ স্থানীয় দলের নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা।

জনতার সঙ্গে সরাসরি কথা

গণসংযোগ চলাকালে ডা. জেহাদ খান বাজারের দোকানপাট, চায়ের স্টল ও বাড়িঘরে গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। সাধারণ মানুষের খোঁজখবর নেন এবং তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। স্থানীয়দের অনেকে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন, গ্রামীণ সড়কের সংস্কার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মানোন্নয়ন নিয়ে তাকে প্রশ্ন করেন।

প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ডা. জেহাদ খান তার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমি দীর্ঘদিন দেশের চিকিৎসা খাতে কাজ করেছি। এখন মনে হচ্ছে আমার অভিজ্ঞতা ও সামর্থ্য দেশের মানুষের কল্যাণে আরও বড় পরিসরে কাজে লাগানো প্রয়োজন। বিশেষ করে তাড়াইল ও করিমগঞ্জের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন বঞ্চিত। আমি নির্বাচিত হলে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেব।”

জনপ্রত্যাশা ও রাজনৈতিক বার্তা

তিনি আরও বলেন, “এলাকার মানুষের মধ্যে জামায়াতের প্রতি যে ইতিবাচক মনোভাব লক্ষ্য করছি, তা আমাকে অনুপ্রাণিত করছে। আমি রাজনীতিকে সেবা করার মাধ্যম হিসেবে দেখি। তাই এই এলাকার মানুষের উন্নয়নই হবে আমার প্রধান লক্ষ্য।”

গণসংযোগ চলাকালে তার সঙ্গে থাকা কর্মী ও সমর্থকরা স্থানীয়দের হাতে প্রচারপত্র বিলি করেন এবং প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন চান। এ সময় অনেকেই তাকে স্বাগত জানান এবং শুভকামনা জানানোর পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

জনসংযোগের তাৎপর্য

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জাতীয় নির্বাচনের আগে এ ধরনের সরাসরি জনসংযোগ ভোটারদের মনোভাব বোঝা এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার অন্যতম কার্যকর উপায়। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়, যেখানে ব্যক্তিগত যোগাযোগের প্রভাব বেশি, প্রার্থীর সরাসরি উপস্থিতি ভোটারদের মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. আবদুল করিম বলেন, “ডা. জেহাদ খান আগে চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এখন তিনি যদি আমাদের এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজের প্রতিশ্রুতি দেন এবং তা বাস্তবায়ন করেন, তাহলে জনগণ অবশ্যই তাকে সমর্থন জানাবে।”

ভবিষ্যৎ কর্মসূচি

দলের স্থানীয় নেতারা জানান, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তাড়াইল ও করিমগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নে ধারাবাহিকভাবে জনসংযোগ চালিয়ে যাবেন ডা. জেহাদ খান। পাশাপাশি ভোটারদের কাছে তার নির্বাচনী অঙ্গীকার ও পরিকল্পনা তুলে ধরা হবে।

তাড়াইল উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা মাসুদুর রহমান বলেন, “আমাদের প্রার্থী একজন সৎ, শিক্ষিত ও অভিজ্ঞ মানুষ। তার নেতৃত্বে এলাকায় উন্নয়ন নিশ্চিত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”

ডা. জেহাদ খান নিজেও জানান, নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি জনগণের প্রত্যাশা, চাহিদা ও সমস্যাগুলো সরাসরি জানার চেষ্টা করছেন। তার ভাষায়, “এলাকার প্রতিটি মানুষ যাতে ন্যায্য সুযোগ ও মৌলিক সেবা পায়, সেটাই হবে আমার কাজের মূল লক্ষ্য।”

সার্বিক প্রেক্ষাপট

কিশোরগঞ্জ-৩ (তাড়াইল-করিমগঞ্জ) আসনটি আগামী নির্বাচনে অন্যতম আলোচিত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এলাকা হয়ে উঠতে পারে। এখানকার ভোটাররা উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও অবকাঠামো সংস্কারকে প্রধান ইস্যু হিসেবে দেখছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরাও মাঠপর্যায়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ডা. জেহাদ খানের শুক্রবারের গণসংযোগ স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, চিকিৎসক ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা হিসেবে তার দ্বৈত পরিচয় ভোটারদের মাঝে ভিন্নধর্মী গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে পারে।

Post a Comment

Previous Post Next Post