ভৈরবে ভারতীয় কসমেটিকসসহ চোরাকারবারী গ্রেফতার

জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব ॥
কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় আমদানিনিষিদ্ধ কসমেটিকসসহ মীর রাতুল (৩৫) নামে এক চোরাকারবারীকে আটক করেছে রেলওয়ে পুলিশ। শনিবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। আটককৃত রাতুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পাঘাচং এলাকার মীর ফেরদৌস মিয়ার ছেলে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে আগেও চোরাচালানের মামলা রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানায়।

রেলওয়ে থানা সূত্র জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রেলওয়ে পুলিশ জানতে পারে যে, কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনে করে এক ব্যক্তি ভারতীয় অবৈধ পণ্য ভৈরবে নামিয়ে দেবে। এরপর পুলিশের একটি দল ভৈরব স্টেশনের ওভারব্রিজের নিচে নজরদারি শুরু করে। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এক ব্যক্তিকে তিনটি কার্টুন হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে পুলিশ তার গতিবিধিতে সন্দেহ করে। পরে তল্লাশি চালিয়ে কার্টুনগুলোর ভিতর থেকে ভারতীয় নামীদামী ব্র্যান্ডের কসমেটিকস উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য লক্ষাধিক টাকা।

রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাঈদ আহমেদ বলেন, “আটককৃত ব্যক্তি কসমেটিকস চোরাচালানে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত বলে ধারণা করছি। তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে এবং পণ্যের উৎস ও গন্তব্য নিয়ে তদন্ত চলছে।”

এদিকে একই দিনে রাত আনুমানিক ১২টা ৪৫ মিনিটে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতিকালে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে নরসিংদী রেলওয়ে ফাঁড়ির পুলিশ। তারা প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের ধারালো ছুরি প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখাচ্ছিল। এ সময় পুলিশ তৎপর হয়ে সুমন ও ফয়সল নামে দুই যুবককে আটক করে। তাদের কাছ থেকে একটি ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধেও নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অপরদিকে, একই দিন ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় দুই কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে পৌঁছালে নিয়মিত তল্লাশির অংশ হিসেবে একটি আসনের নিচ থেকে গাঁজার প্যাকেটটি উদ্ধার করা হয়। কে বা কারা এটি রেখে গেছে, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

রেলওয়ে থানার ওসি সাঈদ আহমেদ বলেন, “রেলপথে মাদক ও চোরাচালান রোধে আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং ট্রেন চলাচল নিরাপদ রাখতে রেলওয়ে পুলিশের টহল আরও জোরদার করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “অভিযানে জনগণের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই সাধারণ মানুষ তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ আরও সহজ হবে।”

সাম্প্রতিক সময়ে রেলপথে মাদক ও চোরাচালান সংক্রান্ত অপরাধের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে কসমেটিকস, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য এবং মাদকদ্রব্য বহনের জন্য রেলপথকে বেছে নিচ্ছে অপরাধীরা। তবে পুলিশের নিয়মিত অভিযানে এসব কর্মকাণ্ড রোধে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post