জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব | ২ আগস্ট
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ছিনতাইয়ের ঘটনায় বারবার আহত ও সর্বস্ব হারানো সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। শনিবার ভোরে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ঢাকা যাওয়ার পথে একটি পরিবার ছিনতাইকারীদের হাতে আক্রান্ত হয় এবং তাদের স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা ছাত্র ও যুব সমাজ থানায় বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে পুলিশের জন্য象 হিসেবে শাড়ি ও চুড়ি নিয়ে হাজির হয় এবং তিন দিনের মধ্যে ছিনতাই বন্ধ না হলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেয়।
বিক্ষোভে উত্তাল ভৈরব
শনিবার বিকেলে শহরের কেন্দ্রীয় এলাকায় আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভৈরব এখন ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে বারবার প্রশাসনকে জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।
ছাত্রনেতা আজহারুল ইসলাম রিদম বলেন,
> “আজ সকালে এক পরিবারকে ছিনতাই করে জখম করা হয়েছে। প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তার কারণে আমরা থানায় প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে শাড়ি-চুড়ি নিয়ে এসেছি। তিন দিনের মধ্যে ভৈরবকে ছিনতাইমুক্ত করতে না পারলে থানার প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে এসব উপহার দেওয়া হবে।”
ভোরে ছিনতাই, থানায় অভিযোগে অবহেলা
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানান, শনিবার ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে শহরের পৌর কবরস্থানের সামনে ছয় সদস্যের একটি ছিনতাইকারী দল একটি পরিবারকে আক্রমণ করে। পরিবারের সদস্যরা ঢাকাগামী তিতাস ট্রেনে করে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। এসময় তাদের মারধর করে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়া হয়।
পরে ভুক্তভোগী ফারদিন খান থানায় অভিযোগ করতে গেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএসআই ফরিদুজ্জামান অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ পরিবারটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুরো ঘটনা প্রকাশ করে, যা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
আটক একজন, তদন্ত চলছে: ওসি
ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানি জানান,
> “ছিনতাইয়ের ঘটনায় ইতিমধ্যেই পঞ্চবটি এলাকার মৃত গোলাপ মিয়ার ছেলে নাঈম মিয়া (২৩) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকি সদস্যদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে। বিক্ষোভকারীরা থানায় এসে শাড়ি-চুড়ি নিয়ে প্রতিবাদ জানানোটা দুঃখজনক হলেও তাদের আশ্বস্ত করেছি—ছিনতাই নির্মূলে অচিরেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
যুবনেতা নুরে আলম নিলয় বলেন,
> “আমরা গত কয়েক মাসে আট দফায় বিক্ষোভ করেছি। কিন্তু বাস্তব কোনো পরিবর্তন আসেনি। এবার আর শুধু বিক্ষোভ নয়, প্রয়োজনে আরও কঠোর আন্দোলনে নামব।”
বিক্ষোভে আরও উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মোস্তাফায়, রিয়াদ ইসলাম, হান্নান আহমেদ হিমু সহ ছাত্র ও যুব সমাজের একাধিক নেতা-কর্মী।
Post a Comment