“ভোট কেনাবেচার দিন শেষ, জনগণ চায় যোগ্য নেতৃত্ব — আবু হানিফ”

কিশোরগঞ্জ-১ (সদর ও হোসেনপুর) আসনের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণ নেতৃত্বের জয় নিশ্চিত হবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস প্রকাশ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ট্রাক প্রতীকের গণসংযোগ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সকালে শহরের ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন আবু হানিফ। বিকেলে মাইজখাপন ও মহিনন্দ ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারে গিয়ে তিনি ব্যবসায়ী, শ্রমজীবী ও পথচারীদের হাতে প্রচারপত্র তুলে দেন।

গণসংযোগ শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আবু হানিফ বলেন,
“স্বাধীনতার পর থেকে কিশোরগঞ্জে অনেক বড় নেতার পদচারণা হয়েছে। কিন্তু জনগণের জীবনে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসেনি। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে তরুণরাই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। তারা প্রমাণ করেছে, অন্যায়ের কাছে আপস করার জায়গা নেই। আগামী নির্বাচনে কিশোরগঞ্জের মানুষ এই তরুণ নেতৃত্বকে বেছে নেবে।”

তিনি আরও বলেন, “জুলাইয়ের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দেশের রাজনীতির সমীকরণ বদলে দিয়েছে। এখন আর কেন্দ্র দখল কিংবা অল্প টাকায় ভোট কেনার সুযোগ নেই। জনগণ সচেতন, তারা যোগ্য প্রার্থী বাছাই করবে।”

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি
আবু হানিফ অভিযোগ করেন, অস্থায়ী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। অপরাধীদের পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও কয়েক দিনের মধ্যে জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা পুনরায় অপরাধে জড়াচ্ছে। অনেকের নামে ১৫-২০টি মামলা থাকা সত্ত্বেও তারা মুক্তভাবে চলাফেরা করছে। এর পেছনে রাজনৈতিক প্রভাবশালী আইনজীবীদের ভূমিকা রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

তার মতে, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মুক্তি অপরাধ প্রবণতা বাড়াচ্ছে। কেবল গ্রেপ্তার নয়, সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত না হলে অপরাধ দমন সম্ভব নয়।

রাজনৈতিক সংস্কারের দাবি
আবু হানিফ বলেন, “জুলাইয়ের আন্দোলনের পর মানুষ ৫৪ বছরের পুরোনো রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন চায়। বিদ্যমান কাঠামোর সংস্কার ছাড়া প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। যারা আন্দোলনের সময় গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি জনগণ দেখতে চায়। তা না হলে আবারও ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে, যা জনগণ কখনো মেনে নেবে না।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি সংস্কার ও বিচার ছাড়াই নির্বাচন হয়, তাহলে যে দমননীতি ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমেছিল, সেই পরিস্থিতি আবার ফিরে আসবে।”

গণসংযোগে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ
এদিনের কর্মসূচিতে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক মোখলেছুর রহমান উজ্জ্বল, কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী অভি চৌধুরী, সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান, প্রচার সম্পাদক মোমিন উদ্দিন জনি, গণনেতা নাদিম হাসান, ছাত্র অধিকার পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলার সভাপতি ইমন খান, সাধারণ সম্পাদক পায়েল চৌধুরী, জেলা যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি সোহাগ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ রমজানসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর তরুণদের প্রতি জনগণের আস্থা বেড়েছে। কিশোরগঞ্জ-১ আসনে আবু হানিফের সরাসরি প্রচারণা ও জনসংযোগে ভোটারদের সাড়া ইতিবাচক হতে পারে। তবে চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত।

Post a Comment

Previous Post Next Post