ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর ও শায়খে চরমোনাই খ্যাত মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম কিশোরগঞ্জ সফর করতে যাচ্ছেন। তাঁর আগমনকে কেন্দ্র করে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। দলটির নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ২০ জুলাই, শনিবার শহরের শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এই বরেণ্য আলেম।
"আদর্শবান যুবকরা জাগলেই, বাংলাদেশ জাগবে" — এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত এই সমাবেশে বক্তারা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক, সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের প্রেক্ষাপটে ইসলামী যুব সমাজের করণীয় নিয়ে আলোচনা করবেন। আয়োজকরা মনে করছেন, এই ধরনের কার্যক্রম যুবসমাজকে সঠিক পথের দিকনির্দেশনা দিতে পারবে এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতা ও গুরুত্ব আরও সুদৃঢ় হবে।
এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন মুহাম্মদ রবিউল ইসলাম শাহীন, যিনি ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি মানসুর আহমাদ সাকী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মুফতি শেখ ইহতেশাম বিল্লাহ আজিজী, যিনি ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এবং জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের উপদেষ্টা প্রফেসর মাওলানা আজিজুর রহমান, যিনি বর্তমানে জার্মান প্রবাসী।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও আদর্শিক বার্তা বহন করবে। "জুলাই চেতনার বাস্তবায়ন", "গণহত্যার বিচার", "শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন" এবং "বৈষম্যহীন ইনসাফভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন" — এসব দাবি ও আদর্শ সামনে রেখে পুরো অনুষ্ঠান পরিচালিত হবে। আয়োজকরা মনে করছেন, এই দাবিগুলো কেবল দলীয় নয়, বরং সমগ্র জাতির সামগ্রিক কল্যাণের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
ইতিমধ্যে কিশোরগঞ্জে অনুষ্ঠানকে ঘিরে ইসলামী যুব আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন এবং মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও কর্মীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন আয়োজনকে সফল করে তুলতে। নায়েবে আমীরের আগমনে কিশোরগঞ্জে ধর্মীয় আবহ ও রাজনৈতিক আলোচনার নতুন মাত্রা যুক্ত হবে বলেই মনে করছেন স্থানীয় বিশ্লেষকরা।
সমাবেশে কিশোরগঞ্জ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মীদের উপস্থিতি প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এছাড়া সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আয়োজকদের মতে, এমন একটি বৃহৎ সমাবেশ দলটির সাংগঠনিক শক্তিকে আরও সুসংহত করবে এবং ভবিষ্যতের রাজনৈতিক কার্যক্রমে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
শায়খে চরমোনাই-এর আগমনকে ঘিরে স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং তাদের যুব শাখা দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে নৈতিক ও ইসলামভিত্তিক রাজনীতির ধারা তৈরি ও চর্চায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মাঝে ইসলামি আদর্শের বিস্তারে দলটি নিয়মিত নানা আয়োজন করে থাকে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মতো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান সেই ধারাবাহিকতার একটি অংশ, যা এবার কিশোরগঞ্জে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দের আশা, এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে ইসলামী যুব আন্দোলনের কর্মকাণ্ডে নতুন গতি সঞ্চার হবে, পাশাপাশি ইসলামি আন্দোলনের প্রতি দেশের সচেতন ও আদর্শবান যুবকদের আগ্রহ আরও বৃদ্ধি পাবে। অনুষ্ঠান শেষে শায়খে চরমোনাই স্থানীয় উলামায়ে কেরাম ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলেও জানা গেছে।
Post a Comment