ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকাডুবি: মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে প্রাণ গেল এক ছাত্রীর, নিখোঁজ দুই

কিশোরগঞ্জ, ১ জুলাই:
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের বহনকারী একটি ছোট নৌকা ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এক ছাত্রী নিহত হয়েছেন এবং আরও দুই শিক্ষার্থী এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার দত্তেরবাজার সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, প্রতিদিনের মতোই নয়জন শিক্ষার্থী সকালে একটি ছোট নৌকায় নদী পার হয়ে মাদ্রাসার উদ্দেশে রওনা দেয়। নদীর মাঝখানে পৌঁছানোর পর নৌকাটি ভারসাম্য হারিয়ে ডুবে যায়। এ সময় স্থানীয়রা চিৎকার শুনে ছুটে আসেন এবং দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন। তবে ততক্ষণে নৌকায় থাকা ছয়জন সাঁতরে কোনোরকমে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও তিনজন ডুবে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় এক ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বাকি দুইজন নিখোঁজ রয়েছে।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি, তবে জানা গেছে, সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার নিয়মিত শিক্ষার্থী ছিল। নিখোঁজদের সন্ধানে স্থানীয় প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস এবং ডুবুরি দল যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান জানান, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। একটি ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং নিখোঁজ দুইজনকে উদ্ধারের জন্য অভিযান চলছে। পরিবারগুলোর পাশে থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।”

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর মতে, ব্রহ্মপুত্র নদ পারাপারের জন্য এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের প্রায় প্রতিদিনই এমন ঝুঁকিপূর্ণ নৌযাত্রা করতে হয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে নদীর স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়। এলাকায় নিরাপদ নৌযান না থাকায় এবং পর্যাপ্ত নজরদারির অভাবে এমন দুর্ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে।

এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত ছাত্রীর পরিবার ও নিখোঁজদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। অনেকে নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগামী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি নৌপথ ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেমন লাইফ জ্যাকেট ও প্রশিক্ষিত মাঝি থাকা বাধ্যতামূলক করা উচিত।

এদিকে, প্রশাসন জানিয়েছে, তদন্ত শেষে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে, সে লক্ষ্যে এলাকাভিত্তিক সচেতনতা কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।#নৌকাডুবি #ব্রহ্মপুত্র_নদ #পাকুন্দিয়া_দুর্ঘটনা #মাদ্রাসা_শিক্ষার্থী #বাংলাদেশ_সংবাদ

Post a Comment

Previous Post Next Post