কিশোরগঞ্জ–নীলগঞ্জ রুটে ঈদ উপলক্ষে চালকদের ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায়ে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে।

কিশোরগঞ্জ–নীলগঞ্জ রুটে ঈদের আগেই বাড়তি ভাড়া আদায়, চালকদের বিরুদ্ধে যাত্রীদের ক্ষোভ

কিশোরগঞ্জ, ৯ জুন ২০২৫ – কিশোরগঞ্জ শহর থেকে নীলগঞ্জ রুটে চলাচলকারী যানবাহনে যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়ার তুলনায় দ্বিগুণ পর্যন্ত বেশি টাকা আদায় করা হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে, আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চালকরা ইচ্ছেমতো ভাড়া বাড়িয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সাধারণত এই রুটে জনপ্রতি ভাড়া ছিল ২৫ টাকা। এখন সেই ভাড়া বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ, এই ভাড়া বৃদ্ধি কোনো সরকারিভাবে নির্ধারিত নয়; বরং এটি চালকদের একক সিদ্ধান্ত।

ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে বাড়তি ভাড়া

ছুটির আগেই বাড়ি ফিরতে চাওয়া মানুষদের জন্য এই অস্বাভাবিক ভাড়া যেন নতুন এক যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক যাত্রী বলছেন, ঈদের সময় ভাড়া কিছুটা বাড়ে এটা স্বাভাবিক হলেও এবার তা একেবারে লাগামছাড়া।

কর্মজীবী সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, “ঈদের সময় তো সবারই খরচ বাড়ে। তার ওপর দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে। চালকদের কাছে যেন কোনো নিয়ম নেই। বললে বলে, যেতে চাইলে যান, না হলে নেমে যান।”

কলেজছাত্রী রিমা আক্তার জানান, “ছুটি পেয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। আগে ২৫ টাকা দিতাম, আজ ৫০ টাকা চাইল। কারণ জিজ্ঞেস করতেই বলে ঈদের সময় এমনই হয়। এটা কোনো যুক্তি হতে পারে?”

চালকদের স্বেচ্ছাচারিতা, নেই ভাড়ার তালিকা

এই রুটে চলাচলকারী অধিকাংশ অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত যানবাহনে কোনো নির্ধারিত ভাড়া তালিকা টাঙানো নেই। ফলে চালকরা ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছেন। ঈদের সময় যাত্রীদের বাধ্যবাধকতার সুযোগ নিয়ে এই অনিয়ম আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।

একজন চালক বলেন, “ঈদের সময় ভাড়া একটু বাড়েই। যাত্রীরাও জানে। সবাই বাড়ির দিকে যাচ্ছে, এখন না তুললে পরে যাত্রী পাব না।”

তবে যাত্রীরা মনে করেন, এটি নিছক অজুহাত মাত্র। তাঁদের মতে, প্রশাসনের নির্ধারিত তালিকা ছাড়া ভাড়া আদায়ের এমন পদ্ধতি সম্পূর্ণ বেআইনি।

প্রশাসনের নীরবতা ঘনীভূত করছে সমস্যা

বিভিন্ন যাত্রী অভিযোগ করেছেন, পরিবহন খাতে এই ধরণের অনিয়ম বন্ধে জেলা প্রশাসন কিংবা সংশ্লিষ্ট পরিবহন কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। মোবাইল কোর্ট বা মনিটরিং টিমের কোনো তৎপরতা ঈদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে চোখে পড়ছে না।

একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, “ঈদের সময় মানুষের চাপ বেশি, এ সময় প্রশাসনের আরো বেশি তৎপর হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমরা দেখছি, এখানে চালকরাই রাজা।”

দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি নাগরিকদের

যাত্রীরা বলছেন, পরিবহন রুটে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে ঈদের মতো সময়ে বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন। ঈদের ভিড়, বাড়ি ফেরার তাড়া—সব কিছু মিলিয়ে এই সময়টায় চালকদের ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় ঠেকাতে কার্যকর প্রশাসনিক ব্যবস্থা জরুরি।

#কিশোরগঞ্জ #ঈদযাত্রা #ভাড়া_বাড়তি #যাত্রী_দুর্ভোগ #পরিবহন_নিয়ন্ত্রণ #বাংলাদেশ_সংবাদ #অতিরিক্তভাড়া #স্থানীয়সমস্যা

Post a Comment

Previous Post Next Post