পুলিশি অভিযানে ভৈরবে জুয়ার আসর থেকে ৬ জন গ্রেপ্তার, মূল হোতা পলাতক

ভৈরব প্রতিনিধি। জয়নাল আবেদীন রিটন 
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পুলিশ এক গোপন অভিযানে জুয়ার আসর থেকে ছয়জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযানে মূল সংগঠক চায়ের দোকানদার রতন মিয়া পালিয়ে গেলেও, তার ব্যবহৃত রুম থেকে অভিযুক্তদের আটক করে পুলিশ। বুধবার (২৫ জুন) সকালে আদালতে হাজির করার পর বিচারকের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে পৌর শহরের নিউ টাউন এলাকায় রতন মিয়ার চায়ের দোকানের পেছনের একটি টিন সেট কক্ষে জুয়ার আসর বসে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে জুয়া খেলার সময় আটক করা হয়। চায়ের দোকানদার রতন মিয়া, যিনি এই জুয়ার আড্ডার মূল হোতা বলে ধারণা করা হচ্ছে, অভিযানের খবর পেয়ে সটকে পড়েন।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে:

নাঈম মিয়া (২৪), পিতা: তারেক মিয়া, উত্তরপাড়া, ভৈরব

সেলিম মিয়া (৪০), পিতা: বাচ্চু মিয়া, নিউ টাউন, ভৈরব

সাদ্দাম মিয়া (২৮), পিতা: মাজু মিয়া, নিউ টাউন, ভৈরব

শাওন (২৫), পিতা: নাসির মিয়া, মৌটুপী, সাদেকপুর ইউনিয়ন

আমিরুল ইসলাম (২৭), পিতা: আব্দুস সাত্তার মিয়া, সোনাহাটি, গৌরীপুর, ময়মনসিংহ

মো. আহাদ (৩০), পিতা: মফিজ মোল্লা, নলগড়া, দৌলতখান, ভোলা


অভিযান ও জব্দ সামগ্রী
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানি সাংবাদিকদের জানান, আটককৃতরা টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলছিল। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১২ হাজার টাকা নগদ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা গোপন সূত্রে জানতে পারি, রতন মিয়ার চায়ের দোকানের পেছনে একটি নির্জন ঘরে দীর্ঘদিন ধরে জুয়ার আসর চলছিল। মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে জুয়া খেলার সময় হাতেনাতে ধরা হয়।”

অভিযানকালে রতন মিয়াসহ আরও কয়েকজন পালানোর চেষ্টা করে। রতন মিয়া কৌশলে পালিয়ে গেলেও বাকি ছয়জনকে আটক করে থানায় আনা হয়। তাদের বিরুদ্ধে জুয়া আইনে মামলা দায়ের করা হয় এবং বুধবার সকালে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জনমনে প্রতিক্রিয়া ও প্রশাসনের অবস্থান
এই ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় অবাধে জুয়ার আসর চলছিল, অথচ স্থানীয় প্রশাসনের নজর ছিল না। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।

এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, জুয়া ও মাদকের বিরুদ্ধে ভৈরব থানা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে সমাজ থেকে এসব অসামাজিক কার্যকলাপ নির্মূল করা হবে বলেও জানান ওসি ফুয়াদ রুহানি।

পালিয়ে যাওয়া রতন মিয়ার খোঁজে অভিযান
অভিযানের সময় পালিয়ে যাওয়া রতন মিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি জানান, “আমরা তাকে ধরার জন্য চেষ্টা করছি। তার অবস্থান চিহ্নিত করতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। শিগগিরই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।”#ভৈরব #জুয়া #পুলিশ_অভিযান #গ্রেপ্তার #ক্রাইমনিউজ

Post a Comment

Previous Post Next Post