কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলায় জুলাই সনদের বাস্তবায়ন, মৌলিক রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে এবং জুলাই গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কর্মসূচির আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাড়াইল উপজেলা শাখা।
বুধবার সকালে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়ক থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। এতে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীরা আওয়ামী বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। পরে পুনরায় উপজেলা পরিষদের সামনে এসে একটি বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হন তারা।
বিক্ষোভ সমাবেশে সঞ্চালনা করেন এনসিপি নেতা মুফতি মিজানুর রহমান সিরাজী। সভাপতিত্ব করেন এনসিপি তাড়াইল উপজেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মহিউদ্দিন মাসুদ। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ জেলার জুলাই আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক এবং এনসিপি জেলার সাংগঠনিক নেতা ইকরাম হোসেন।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, "দেশ আজ গভীর রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকটে। জনগণের মৌলিক অধিকার আজ হুমকির মুখে। জুলাই সনদ ছিল এই সংকট থেকে উত্তরণের একটি স্পষ্ট রূপরেখা। কিন্তু বারবার জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে শাসকগোষ্ঠী তা অগ্রাহ্য করেছে।"
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী শেখ কাওসার হোসেন। তিনি বলেন, "এনসিপি শুধু রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন। আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলবো, অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত করবো।"
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ—এম এ মান্নান, আলমগীর হোসেন, শাফায়াত উল্লাহ প্রমুখ। বক্তারা সবাই জুলাই গণহত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানান এবং দাবি করেন, রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনা, দুঃশাসন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের এখনই সময়।
এ সময় তাড়াইল উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত এনসিপির নেতাকর্মী, সমর্থক এবং সাধারণ জনগণ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। মিছিল-সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড, যেখানে লেখা ছিল— "জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কর", "বিচার চাই জুলাই গণহত্যার", "দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দাও" ইত্যাদি স্লোগান।
এ ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টি একটি নতুন বার্তা দিচ্ছে— সাধারণ জনগণের দাবি ও অধিকারের পক্ষে নির্ভীকভাবে অবস্থান নেয়ার। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, তাড়াইল ছাড়াও কিশোরগঞ্জ জেলার অন্যান্য উপজেলায়ও পর্যায়ক্রমে এমন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
উল্লেখ্য, "জুলাই সনদ" জাতীয় নাগরিক পার্টির একটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক ঘোষণাপত্র, যেখানে মৌলিক সংস্কার, জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১০ দফা প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়।#জাতীয়নাগরিকপার্টি #কিশোরগঞ্জ #জুলাইআন্দোলন #রাজনীতি #বিক্ষোভসমাবেশ
Post a Comment