দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে ডাকাতদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন বাংলাদেশি যুবক এমদাদুল হক। তাঁর পাসপোর্টে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদি ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামকে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে দেখানো হলেও, এলাকাবাসী ও স্থানীয় প্রশাসন কেউই তার অস্তিত্ব খুঁজে পাননি। এতে তার প্রকৃত পরিচয় নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার সময় বিকেল ৫টার দিকে কেপটাউনের বুস্টারস ডিডোরেন্স এলাকায় এক দোকানে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন এমদাদুল হক ও তার সহকর্মী বিল্লাল হোসেন। ডাকাত দল দোকানে ঢুকে টাকা-পয়সা লুটপাট শেষে পালানোর সময় গুলি চালায়, যা তাদের জীবন কেড়ে নেয়। দোকানটির মালিক ছিলেন মনির হোসেন নামের এক প্রবাসী বাংলাদেশি।
এমদাদুল হকের পাসপোর্ট অনুযায়ী তার বাবার নাম শফিকুল আলম এবং মায়ের নাম তাসলিমা। কিন্তু মির্জাপুর গ্রামে তার কোনো আত্মীয়স্বজন বা পরিচিত জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দা ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কাজের সাথে যুক্ত তাজুল ইসলাম বলেন, “আমি বহু বছর ধরে এলাকায় পাসপোর্ট ও এনআইডি সংক্রান্ত কাজ করি। এমদাদুল হক নামের কাউকে আমি কখনো দেখিনি, এমনকি তার পরিবারের কেউও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।”
চরফরাদি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান জানান, ঘটনার পর তিনি প্রতিটি ওয়ার্ড সদস্যকে এমদাদুল হক সম্পর্কে খোঁজ নিতে বলেছেন। তবে কেউই তার কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তিনি বলেন, “এ নামের কেউ আমাদের ইউনিয়নে নেই। প্রবাসে থাকলেও কোনো সময় সে এখানে পরিচিত ছিল না।”
এদিকে অনলাইনে পাসপোর্ট যাচাই করে দেখা যায়, এমদাদুলের জন্মনিবন্ধনের ঠিকানা ছিল ঢাকার মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকায়। বিষয়টি আরও জটিল করেছে তার পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন।
এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, “এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে আমাদের কাছে এমন কোনো তথ্য আসেনি। আমরা খোঁজ নিচ্ছি।”
পাসপোর্টে ভুল ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে কি না—এ প্রশ্নও উঠে এসেছে। অনেক ক্ষেত্রে ভুয়া ঠিকানা দিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করা হয়, যা ভবিষ্যতে জালিয়াতি বা অপরাধের পথ সুগম করে দেয়। এ ঘটনায় এমন অনিয়ম হয়ে থাকলে, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদন্তের দাবি রাখে।#দক্ষিণআফ্রিকায়_বাংলাদেশি_নিহত #কিশোরগঞ্জ #পাসপোর্টজালিয়াতি #প্রবাসসংবাদ
Post a Comment