ভৈরব পৌর শহরে বাবাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ছেলে আল আমিনকে আটক করেছে পুলিশ

কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরে ঘটে গেছে এক মর্মান্তিক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা। বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ছেলেকে। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (২২ জুন) দিনগত রাত আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটে ভৈরবপুর উত্তরপাড়ার কেবি হাউজ এলাকার জালাল মিয়ার বাসায়।

নিহত ব্যক্তির নাম হাফিজ উদ্দিন (৬৫)। তিনি নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার মনিপুরা গ্রামের মোল্লা বাড়ির বাসিন্দা হলেও ভৈরবে ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন। গ্রেফতার হওয়া ছেলে আল আমিন (২৬) পেশায় বেকার বলে জানা গেছে এবং সে দীর্ঘদিন ধরেই বাবার সঙ্গে একই ভাড়া বাসায় থাকছিল।

ঘটনা যেভাবে প্রকাশ্যে আসে

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে পাশের কক্ষ থেকে হঠাৎ চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা জড়ো হন। তারা গিয়ে দেখেন, হাফিজ উদ্দিন ও তার ছেলের ঘরের দরজায় তালা ঝুলছে। বারবার ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পাওয়ায় সন্দেহ হয় সবার। এরপরই একজন জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে খবর দেন।

পরে ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তালাবদ্ধ কক্ষের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। রক্তাক্ত অবস্থায় হাফিজ উদ্দিনের নিথর মরদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানায় পুলিশ।

পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত ও বক্তব্য

ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শক্তি মৃধা জানান, “রাত দেড়টার দিকে খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যাই। ঘরের দরজা ভেঙে এক বৃদ্ধের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করি। তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক কোপ ছিল। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং ছেলে আল আমিনকেই আমরা সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করেছি।”

তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো দেশীয় অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। তবে হত্যার মূল কারণ সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে এটি পারিবারিক কলহের জেরে ঘটেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

পারিবারিক সম্পর্ক নিয়ে স্থানীয়দের মত

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, হাফিজ উদ্দিন ও তার ছেলে আল আমিনের মধ্যে আগে থেকেই ঝগড়া-ঝাটি লেগে থাকত। আল আমিনের আচরণ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝেও নানা কথা শোনা যেত। কেউ কেউ জানিয়েছেন, ছেলে মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন বলেও সন্দেহ করেন।

আইনি প্রক্রিয়াধীন

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরও জানান, “আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আল আমিনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।”#ভৈরবহত্যাকাণ্ড #আলআমিনআটক #পুলিশতদন্ত #বাংলাদেশসংবাদ #পারিবারিকহত্যা #ভৈরবনিউজ #নরসিংদী

Post a Comment

Previous Post Next Post