ভৈরবে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাদ থেকে ৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার

ভৈরব প্রতিনিধি ; জয়নাল আবেদীন রিটন 
সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাদ থেকে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যমানের ৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে ভৈরব রেলওয়ে থানার পুলিশ। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপর অভিযানে এ বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ভৈরব রেলওয়ে থানা সূত্রে জানা যায়, ২৬ জুন রাত প্রায় পৌনে ১০টার দিকে ভৈরব রেলস্টেশনে ট্রেনটি থামলে রেলওয়ে পুলিশের একটি দল তাদের নিয়মিত দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে ট্রেনের ছাদে ওঠে। এসআই দিদার হোসেনের নেতৃত্বে এই টিম মাদক ও অন্যান্য অপরাধ প্রতিরোধে তল্লাশি চালায়।

ট্রেনের ছাদে সন্দেহজনক ব্যাগ: বিপুল পরিমাণ গাঁজার সন্ধান

তল্লাশিকালে পুলিশ সদস্যদের নজরে পড়ে তিনটি সন্দেহজনক ব্যাগ। এর মধ্যে ছিল একটি স্কুল ব্যাগ, একটি বাজার সদার থলে এবং একটি পাটের চটের ব্যাগ। এসব ব্যাগের আশপাশে কোনো মালিক বা সন্দেহভাজন কাউকে দেখা না যাওয়ায় ব্যাগগুলোকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে থানায় নিয়ে আসা হয়।

পরে ব্যাগগুলো খুলে চারটি প্যাকেটজাত পোটলার ভেতর থেকে ৮ কেজি পরিমাণ গাঁজা পাওয়া যায়। উদ্ধারকৃত মাদকের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

আইনগত ব্যবস্থা: সাধারণ ডায়রি হয়েছে, তদন্ত চলছে

ঘটনার পরপরই ভৈরব রেলওয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশ মনে করছে, মাদক কারবারিরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতে ট্রেনের ছাদকে নিরাপদ পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে।

রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ পিপিএম জানান, “আমাদের পুলিশ সদস্যরা সর্বদা সচেতন এবং আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিদিনই নিয়মিত তল্লাশি চালিয়ে থাকি। ট্রেনের ছাদে এই ধরনের অপরাধমূলক পন্থায় মাদক পাচারের চেষ্টা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য আমাদের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।”

মাদক চক্রের নতুন কৌশল?

এমন ঘটনায় নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে—ট্রেনের ছাদে মাদক পাচার কি মাদক চক্রের নতুন কৌশল? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়াতে অপরাধীরা বরাবরই ভিন্ন ভিন্ন পথ বেছে নেয়। ট্রেনের ছাদ, বিশেষ করে রাতের ট্রেন যাত্রার সময়, অনেকটাই নিরাপদ মনে করে চক্রটি মাদক পরিবহন করে থাকতে পারে।

রেলওয়ে পুলিশের নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ

সাম্প্রতিক সময়ে রেলপথে মাদক পাচারের ঘটনা বাড়ছে বলে মনে করছেন রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। এর ফলে রেলওয়ে পুলিশ এখন নজরদারির কৌশল পরিবর্তন করছে। নিয়মিত ছাদ ও বগি তল্লাশি ছাড়াও, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, যাত্রীদের পরিচয় যাচাই এবং সন্দেহভাজন চলাচলের উপর নজরদারি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।#মাদক_বিরোধী_অভিযান #ভৈরব #রেলওয়ে_পুলিশ #গাঁজা_উদ্ধার #মাদকদ্রব্য #বাংলাদেশ

Post a Comment

Previous Post Next Post