কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় আসন্ন ঈদুল আজহাকে ঘিরে কোরবানির জন্য প্রস্তুত গবাদি পশুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৭৬৬টি। অথচ উপজেলায় পশুর চাহিদা রয়েছে ১০ হাজার ৩৯২টি। অর্থাৎ চাহিদার চেয়ে প্রায় ১ হাজার ৩৭৪টি পশু অতিরিক্ত রয়েছে, যা স্থানীয় বাজারে চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, প্রকৃত সংখ্যাটি আরও বেশি হতে পারে। পশু উৎপাদনে আত্মনির্ভরশীল হোসেনপুর এখন কোরবানির পশু সরবরাহে বাইরের কোনো অঞ্চলের ওপর নির্ভর করছে না, বরং নিজের চাহিদা নিজেরাই মেটাতে সক্ষম হচ্ছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর হোসেনপুরে কোরবানির জন্য প্রস্তুত পশুর সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ২৮১টি এবং চাহিদা ছিল ৯ হাজার ৮৯৭টি। তুলনামূলকভাবে এ বছর পশুর সংখ্যাও বেড়েছে, চাহিদাও বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে খামারির সংখ্যাও। বর্তমানে উপজেলায় নিবন্ধিত খামারির সংখ্যা ২ হাজার ১১৬ জন, যা গত বছরের তুলনায় ২৯ জন বেশি।
খামারিরা জানিয়েছেন, সরকারি পরামর্শ, চিকিৎসা ও প্রশিক্ষণ পাওয়ার ফলে গরু মোটাতাজাকরণ এখন অনেক সহজ হয়েছে। এক খামারির ভাষায়, “সরকারের সহযোগিতায় খামার পরিচালনা সহজ হয়েছে। যদি এবার ভালো দাম পাই, তবে পরের বছর বড় পরিসরে খামার করবো।” তবে বেশ কয়েকজন খামারি গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, গত বছরের তুলনায় এবারে পশু পালনে খরচ বেড়েছে, বিশেষ করে খাদ্যের দামে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হোসেনপুরে এ বছর দেশীয় জাতের গরু মোটাতাজাকরণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অনেক খামারে উন্নত জাতের হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান ক্রস ও শাহীওয়াল গরুও রয়েছে। এসব গরু সুস্থ, মানসম্মত এবং বাজারে ভালো দামে বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. উজ্জল হোসাইন জানান, “খামারিদের শুরু থেকে প্রশিক্ষণ, ভেটেরিনারি সেবা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ঈদের আগেই প্রতিটি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। সেই সঙ্গে ঈদের সময় পশুর হাটে মেডিকেল ক্যাম্প এবং ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা টিমও গঠন করা হবে।”
এই প্রস্তুতির মাধ্যমে হোসেনপুর উপজেলায় কোরবানির পশুর মান, সংখ্যা ও সেবার দিক থেকে এক উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এতে খামারিরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি ভোক্তারাও পাবেন নিরাপদ ও মানসম্মত পশু।#হোসেনপুর #কোরবানিরপশু #ঈদুলআজহা২০২৫ #বাংলাদেশখামার #গবাদিপশু #প্রাণিসম্পদ #কৃষিখবর #খামারউন্নয়ন #বাংলাদেশ
Post a Comment