ভৈরবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে জুতার বাজারের ৪০ দোকান পুড়ে ছাই

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত লালু-কালু মার্কেটে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৪০টি দোকান সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় ব্যবসায়ীদের প্রায় ২ কোটি টাকার মালামাল ধ্বংস হয়ে গেছে বলে দাবি করা হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলা পরিষদের পাশে জলপরী পার্ক রোডে অবস্থিত এই মার্কেটে আগুন লাগে। মুহূর্তেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং দোকানগুলো দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে।

আগুন লাগার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ভৈরব বাজার ফায়ার সার্ভিস ও নদী ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট। এক ঘণ্টারও বেশি সময় চেষ্টার পর তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ততক্ষণে আগুনে পুড়ে গেছে একের পর এক দোকান, ধ্বংস হয়ে গেছে ব্যবসায়ীদের সঞ্চিত পুঁজি ও জীবনের স্বপ্ন।

ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেটের মালিক কাজী মাসুদ গণমাধ্যমকে জানান, “সাধারণত আমরা প্রতিদিন সন্ধ্যায় দোকান বন্ধ করি। আজ রাত একটার দিকে হঠাৎ ফোন পাই—মার্কেটে আগুন লেগেছে। দৌঁড়ে এসে দেখি সামনের সারির প্রায় সবগুলো দোকান পুড়ে গেছে। আমাদের প্রাথমিক ধারণা, এটি বিদ্যুৎ সংযোগের শর্টসার্কিট থেকে ঘটেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দুই কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।”

অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো মন্তব্য না করলেও, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তদন্ত ছাড়া নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। ভৈরব ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর রাজন আহমেদ বলেন, “আমরা আগুন লাগার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের তিনটি ইউনিট এক ঘণ্টা কাজ করেছে। আগুন কোথা থেকে লেগেছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিকভাবে এক কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতির কথা বলা হচ্ছে।”

এ ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই তাদের দোকান ও মালামাল রক্ষায় ছুটে এলেও আগুনের তীব্রতায় কিছুই রক্ষা করতে পারেননি। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিরা এখন নিঃস্ব অবস্থায় বসে আছেন। অনেকের একমাত্র আয়ের উৎস ছিল এই দোকানগুলো।

এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য একটি তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে। ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছে পুনর্বাসন ও আর্থিক সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও, বিপুল পরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে মার্কেটগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার কথাও ভাবা হচ্ছে।

#ভৈরব #অগ্নিকাণ্ড #জুতারবাজার #বাংলাদেশসংবাদ #বিপর্যয় #ফায়ারসার্ভিস #ভৈরবখবর #দোকানপুড়ে গেছে #ব্যবসায়ীকক্ষয় #বাংলাদেশ

Post a Comment

Previous Post Next Post