ইসরাইলকে ধুলোয় মিশিয়ে দেব বলে ট্রাম্পের হুমকি!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার আসন্ন মধ্যপ্রাচ্য সফরের প্রাক্কালে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে কড়া বার্তা দিয়েছেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইসরায়েল যদি তার পরিকল্পনায় বাধা সৃষ্টি করে কিংবা কথা না শোনে, তবে তাকে ‘ধুলোয় মিশিয়ে’ দেওয়া হবে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই শনিবার (১০ মে) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই বিস্ফোরক মন্তব্য তুলে ধরে।

মধ্যপ্রাচ্য সফরের আগে উত্তেজনা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মঙ্গলবার থেকে উপসাগরীয় দেশগুলো সফরে যাচ্ছেন। সফরের উদ্দেশ্য—মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ, সংঘাত এবং মানবিক সংকট থেকে অঞ্চলটিকে রক্ষা করা ও একটি নতুন সমঝোতার পরিবেশ তৈরি করা। এই সফরে তিনি ইরান, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনসহ কয়েকটি জটিল ইস্যুতে ইতিবাচক অগ্রগতি চান।

তবে ট্রাম্পের মতে, এই উদ্যোগে ইসরায়েল প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে। তিনি মনে করেন, নেতানিয়াহুর সরকার এমন কিছু কর্মকাণ্ড করছে, যা তার কৌশলগত পরিকল্পনাকে ব্যাহত করতে পারে। এজন্যই ট্রাম্প প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

ট্রাম্প-নেতানিয়াহু সম্পর্কে ফাটল

মিডল ইস্ট আই-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে এক সিনিয়র পশ্চিমা কর্মকর্তা বলেন, “ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর সম্পর্ক এখন আর আগের মতো নেই। ইসরায়েল ইস্যুতে ট্রাম্প গভীরভাবে হতাশ। এমনকি তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্কেও ফাটল দেখা দিয়েছে।”

বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের সঙ্গে চলমান পারমাণবিক আলোচনা ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর সম্পর্কের অবনতির মূল কারণ। যুক্তরাষ্ট্র চায় এই আলোচনার মাধ্যমে একটি টেকসই সমাধান আসুক, যেখানে ইরানের পরমাণু কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কিন্তু ইসরায়েল এর বিরোধিতা করছে এবং এটিকে জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি হিসেবে দেখছে।

মার্কিন নীতিতে পরিবর্তন

ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো থেকে ধারণা করা যাচ্ছে, ওয়াশিংটন এখন মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মার্কিন প্রোগ্রাম পরিচালক মাইকেল ওয়াহিদ হান্না বলেন, “ট্রাম্প এখন ইসরায়েলের স্বার্থ বিবেচনায় না নিয়েই ইরান এবং ইয়েমেন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এটি নিঃসন্দেহে ইসরায়েলের জন্য উদ্বেগজনক।”

তবে তিনি এটাও জানান, ফিলিস্তিনি ইস্যুতে এখনো বড় কোনো পরিবর্তন বা অগ্রগতি চোখে পড়েনি।

উপসাগরীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক

সফরের অংশ হিসেবে ট্রাম্প উপসাগরীয় অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এতে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও ওমানের নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। আলোচনায় যুদ্ধবিরতি, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, নিরাপত্তা চুক্তি এবং ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচনায় আসবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই সফর মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। তবে এতে ইসরায়েলের ভূমিকা ও প্রতিক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post