বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা থেকে দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন সংগঠনটির জেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন মিয়া এবং সংগঠক রিয়াদ আহমেদ উল্লাস। সংগঠনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে বলে জানা গেছে।
শনিবার (৪ মে ২০২৫) সংগঠনের পক্ষ থেকে এক লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বহিষ্কৃত দুই নেতার বিরুদ্ধে সংগঠনের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণ ও তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে স্থায়ীভাবে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিটি সাক্ষর করেন জেলা শাখার আহ্বায়ক ইয়ারাম হোসেন এবং সদস্য সচিব মোঃ ফয়সাল।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “মামুন মিয়া ও রিয়াদ আহমেদ উল্লাস আর কখনো এই সংগঠনের কোনো কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকতে পারবেন না। তারা সংগঠনের নাম ব্যবহার করে কোনো কর্মকাণ্ড চালালে সেটির দায়ভার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা বহন করবে না।”
সংগঠনটির কঠোর অবস্থান
এ সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে সংগঠনটির অভ্যন্তরীণ পরিবেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে নেতৃবৃন্দ বলছেন, এটি একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষা করতেই এমন পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।
জেলা আহ্বায়ক ইয়ারাম হোসেন জানান, “আমরা কখনোই ব্যক্তিপূজার ভিত্তিতে সংগঠন পরিচালনা করি না। সংগঠনের আদর্শ ও শৃঙ্খলা যেই লঙ্ঘন করবে, সে যত বড় নেতাই হোক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এই সিদ্ধান্ত আমাদের দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা।”
তিনি আরও বলেন, “সাংগঠনিক কাঠামো সুদৃঢ় রাখতে এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্বকে আদর্শ ভিত্তিতে গড়ে তুলতেই এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
বহিষ্কৃতদের প্রতিক্রিয়া মেলেনি
এ বিষয়ে বহিষ্কৃত মামুন মিয়া ও রিয়াদ আহমেদ উল্লাসের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তারা নিজেদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় কমিটির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন।
তবে সংগঠনের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বহিষ্কৃতদের বিরুদ্ধে একাধিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ছিল। কয়েক মাস ধরেই তাদের কার্যকলাপে অস্বচ্ছতা ও সংগঠনের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ উঠছিল। সংগঠনের অভ্যন্তরীণ তদন্তে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়।
ভবিষ্যৎ করণীয়
সংগঠনটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, এই বহিষ্কারের ফলে জেলা শাখার নেতৃত্বে সাময়িক শূন্যতা সৃষ্টি হলেও খুব শিগগিরই নতুন নেতৃবৃন্দ দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন। ইতোমধ্যেই সম্ভাব্য যোগ্য নেতাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
তরুণদের অধিকার ও ন্যায়বিচারের পক্ষে সোচ্চার একটি ছাত্র সংগঠন হিসেবে পরিচিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। নীতিহীন ও শৃঙ্খলাভঙ্গকারী কার্যক্রম দমনে সংগঠনটি কঠোর ভূমিকা পালন করে আসছে।
Post a Comment