ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আহমেদ সাম্যের হত্যার বিচার দাবিতে আজ মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে কলেজ শাখা ছাত্রদল। দুপুর আড়াইটার দিকে এ কর্মসূচি শুরু হয় এবং এটি কলেজ ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে এসে শেষ হয়।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারাদেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে গুরুদয়াল কলেজ শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সাম্য হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে এই বিক্ষোভে অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তারা সাম্যের হত্যাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
গুরুদয়াল কলেজ শাখা ছাত্রদলের নেতারা বলেন, "সাম্যের মতো মেধাবী ছাত্র ও সংগঠককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এটি নিছক একটি অপরাধ নয়, এটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক সন্ত্রাস। এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিতে ভয়ভীতি ছড়ানোর অপচেষ্টা করা হয়েছে।"
বক্তারা আরো বলেন, অপরাধীদের বিচারের আওতায় না আনলে এই ধরণের নৃশংস ঘটনা বারবার ঘটবে। সাম্য হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন ছাত্রদল নেতারা।
উল্লেখ্য, শাহরিয়ার আহমেদ সাম্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের একজন নিয়মিত ছাত্র। পাশাপাশি তিনি ছাত্রদলের স্যার এ এফ রহমান হল শাখার সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন।
গত ১৩ মে রাতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে একদল দুর্বৃত্ত তার ওপর হামলা চালায়। রাত আনুমানিক ১২টার দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে শুধু শিক্ষাঙ্গনই নয়, সারাদেশে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, শিক্ষক ও সহপাঠীরা সাম্যের মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা জড়িত থাকতে পারে এবং হত্যাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে বিচারের আওতায় না আনলে আরও বড় ধরনের আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এদিকে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং দোষীদের গ্রেফতারে ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
ছাত্রদল নেতা সাম্যের মৃত্যু শিক্ষাঙ্গনে নতুন করে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবক মহল এখন অপেক্ষা করছে—এই নির্মম হত্যার বিচার কবে হবে এবং অপরাধীরা কীভাবে শাস্তি পাবে।
Post a Comment