কিশোরগঞ্জে র‍্যাবের অভিযানে মাদকবিরোধী সাফল্য: প্রায় ৪ কেজি গাঁজাসহ এক পাচারকারী গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: রাইয়্যান 
দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জে আবারও বড় সাফল্য অর্জন করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। আজ বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের বালিখোলা ঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় চার কেজি গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র‍্যাব-১৪ এর সিপিসি-২ ইউনিট।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আলী (২৫)। তিনি ময়মনসিংহ জেলার বোডঘরের পশ্চিম বাজার এলাকার মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। র‍্যাব সূত্রে জানা যায়, অভিযানের সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা গাঁজার পরিমাণ ছিল ৩ কেজি ৯০০ গ্রাম। আটককৃত মাদকের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা।

র‍্যাব-১৪ এর একজন কর্মকর্তা জানান, গোপন সূত্রে তথ্য পাওয়ার পরপরই তারা অভিযানের পরিকল্পনা করেন। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলীকে বালিখোলা ঘাট এলাকা থেকে আটক করা হয়। তার দেহ তল্লাশির পর একটি বস্তার ভেতরে লুকানো অবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গাঁজা পাওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, “আমরা আগে থেকেই জানতাম যে, এই এলাকায় মাদক পাচারকারীদের একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। তাদের শনাক্ত করতে দীর্ঘদিন ধরেই নজরদারি চালানো হচ্ছিল। আজকের অভিযানে সফলভাবে একজনকে আটক করা সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যতেও আমাদের মাদকবিরোধী কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”

স্থানীয় সূত্র জানায়, বালিখোলা ঘাট এলাকাটি নদীপথ ও নিকটবর্তী বিভিন্ন ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগের সুবিধা থাকায় চোরাকারবারিদের জন্য একটি সক্রিয় পয়েন্টে পরিণত হয়েছে। এ এলাকায় মাদক পাচার বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

মাদকবিরোধী এই অভিযানে র‍্যাবের কৌশলী পরিকল্পনা ও তাৎক্ষণিক তৎপরতা ছিল প্রশংসনীয়। মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং তাকে করিমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাদক নিয়ন্ত্রণে র‍্যাব নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এর অংশ হিসেবে কিশোরগঞ্জেও এ ধরনের অভিযান জোরদার করা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বাস্তবায়নে র‍্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।

মাদকদ্রব্য সমাজের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে উল্লেখ করে র‍্যাব কর্মকর্তারা সকলের প্রতি আহ্বান জানান, মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি যে কোনো ধরনের মাদক সংক্রান্ত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর অনুরোধও জানানো হয়।

এই অভিযানের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও র‍্যাবের তৎপরতা ও নজরদারি শক্তিশালীভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং মাদকচক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post