“আমাদের নার্স, আমাদের ভবিষ্যৎ, অর্থনৈতিক শক্তি, নার্সিং সেবার ভিত্তি”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১২ মে রোববার কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়ায় আন্তর্জাতিক নার্স দিবস ২০২৫ উদযাপন করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্যোগে আয়োজিত দিবসটির কর্মসূচিতে ছিল রঙিন র্যালি, প্রাঞ্জল আলোচনা সভা এবং কেক কাটার মুহূর্ত। নার্সদের প্রতি শ্রদ্ধা ও স্বীকৃতি জানানোর উদ্দেশ্যে এই দিবসটি উদযাপন করা হয়, যা স্বাস্থ্যখাতে তাদের অপরিসীম অবদানের কথা মনে করিয়ে দেয়।
সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। র্যালিটি শহরের বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে ফিরে আসে। র্যালিতে স্বাস্থ্যকর্মী, নার্স, কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হলরুমে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়, যেখানে নার্সদের ভূমিকা এবং স্বাস্থ্যসেবায় তাদের নিরবচ্ছিন্ন পরিশ্রমের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরে আলম খান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মামুন সরকার, যিনি নার্সদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “স্বাস্থ্যসেবায় নার্সরা অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও মানবিক সেবা আমাদের সমাজকে সুস্থ রাখছে।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. নাজিবুল হক, যিনি বলেন, “নার্সরা চিকিৎসার প্রতিটি ধাপে গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী। তাদের অবদান ছাড়া স্বাস্থ্যব্যবস্থার অগ্রগতি কল্পনাও করা যায় না।”
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পাকুন্দিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মোবারক হোসেন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শাহজাহান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ডা. মো. দৌলওয়াত হোসেন প্রমুখ। তারা প্রত্যেকেই নার্সদের সমাজে মর্যাদা ও সম্মান বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নার্সিং কর্মকর্তা সাদিয়া আশরাফ এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মো. হেলাল উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন পর্যায়ের নার্সিং কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ, যাদের সম্মানে কেক কাটা ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
আলোচনায় উঠে আসে যে, স্বাস্থ্যসেবায় নার্সদের অবদান শুধু রোগীর শুশ্রূষায় নয়, বরং তারা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। কর্মক্ষেত্রে তারা যত্ন, সহমর্মিতা এবং মানবিকতাকে প্রতিদিনের দায়িত্বে রূপান্তর করে তুলছেন।
আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উদযাপনের মধ্য দিয়ে পাকুন্দিয়ায় একটি ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে পড়ে—নার্সদের কেবল স্বাস্থ্যকর্মী নয়, বরং সমাজের অপরিহার্য অংশ হিসেবে মূল্যায়ন করা উচিত। এমন আয়োজন নার্সদের অনুপ্রাণিত করে এবং ভবিষ্যতে তাদের ভূমিকাকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়তা করে।
Post a Comment