কিশোরগঞ্জের কটিয়াদিতে অস্কারজয়ী সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়িতে তিনদিনব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু হয়েছে

বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি ও অস্কারজয়ী পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের শিকড় ছুঁয়ে থাকা কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার মসূয়া গ্রামে শুরু হয়েছে তিনদিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। ঐতিহ্যবাহী এই আয়োজন মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কটিয়াদি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাঈদুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন মসূয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গোলাপ মিয়া এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন কটিয়াদি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. তারিকুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন খান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাবনী আক্তার এবং মসূয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক।

প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শেষদিকে আয়োজন করা হয় এই বৈশাখী মেলার, যা স্থানীয়দের জন্য একটি বড় উৎসব। সাধারণত পাঁচ দিনব্যাপী চলা এই মেলা এবার নানা কারণে তিনদিনে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।

তবে সময়সীমা সংক্ষিপ্ত হলেও উৎসবে কোনো ঘাটতি নেই। মসূয়া গ্রামের পাশাপাশি কটিয়াদি উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এসে জড়ো হয়েছেন এই প্রাণের উৎসবে অংশ নিতে। এমনকি কটিয়াদির বাইরের এলাকা থেকেও বহু মানুষের আগমন ঘটেছে মেলায়, যা গ্রামীণ সমাজে এক আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

মেলার মূল আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে স্থানীয় শিল্পীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, হস্তশিল্পের স্টল, গ্রামীণ খেলাধুলা এবং ঐতিহ্যবাহী খাবারের দোকান। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই মেলায় সমানভাবে উপভোগ করছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও এই মেলাকে ঘিরে বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। তাদের মতে, প্রতি বছর এই মেলার মাধ্যমে বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যায়, যা গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য সহায়ক।

আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল মেলার দ্বিতীয় দিনে আগত দর্শনার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সার্বিক নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এই মেলার মাধ্যমে যেমন সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক ভিটা ও তার ঐতিহ্য নতুন করে আলোচনায় এসেছে, তেমনি কিশোরগঞ্জের সাংস্কৃতিক চেতনারও বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। গ্রামের মানুষদের মুখে হাসি ফোটানো ও ঐতিহ্য ধরে রাখার এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post