কিশোরগঞ্জের ইটনায় হাওরে ধান শুকানোর সময় বজ্রাঘাতে এক কৃষক নিহত ও তার স্ত্রী আহত হয়েছেন।#বজ্রাঘাত #কৃষকেরমৃত্যু #ইটনা #কিশোরগঞ্জ #বাংলাদেশসংবাদ #গ্রামীনজীবন

কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলায় হাওরে ধান শুকানোর সময় বজ্রাঘাতে এক কৃষক tragically নিহত হয়েছেন এবং তার স্ত্রী আহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৬ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের দৈলং গ্রামে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত কৃষকের নাম নিরোদ দাস (৬২), তিনি দৈলং নতুন হাটির বাসিন্দা এবং মৃত বিষ্ণু দয়াল দাসের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দিনটি ছিল মেঘলা এবং বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও নিরোদ দাস ও তার স্ত্রী সকাল থেকে ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত ছিলেন। বিকেলের দিকে যখন তারা হাওরে ধান রোদে দিতে ব্যস্ত ছিলেন, তখন হঠাৎ প্রবল শব্দে বজ্রপাত ঘটে। বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই নিরোদ দাসের মৃত্যু ঘটে। এ সময় তার স্ত্রীও আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং স্থানীয়ভাবে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রদীপ কুমার দাস বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “নিরোদ দাস ও তার স্ত্রী প্রতিদিনের মতো মাঠে ধান শুকাতে গিয়েছিলেন। হঠাৎ বজ্রপাত হলে তিনি প্রাণ হারান। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। তার পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাই।”

ইটনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাফর ইকবাল জানান, “বজ্রাঘাতে একজন কৃষকের মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি। স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রয়োজনে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, বজ্রপাতের সময় আশপাশে মেঘ জমেছিল এবং বজ্রের শব্দে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। তারা আরও জানান, এমন আকস্মিক বজ্রপাতের সময় সাধারণত হাওর এলাকার মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান, তবে নিরোদ দাস ও তার স্ত্রী ধান শুকানোর কাজে এতটাই মনোযোগী ছিলেন যে, সময়মতো সরে যেতে পারেননি।

বাংলাদেশে বজ্রপাত একটি ক্রমবর্ধমান প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত বজ্রপাতের ঝুঁকি বেশি থাকে। বিশেষ করে হাওর ও উন্মুক্ত মাঠে কাজ করা মানুষের মধ্যে ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

বজ্রপাত এড়াতে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা কিছু সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে খোলা মাঠে কাজ বন্ধ রাখা, বজ্রপাতের সময় উঁচু গাছপালা বা বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে আশ্রয় না নেওয়া এবং প্রয়োজনে নিরাপদ ঘরে অবস্থান করা। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, কৃষকদের প্রশিক্ষণ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কিত সচেতনতা বৃদ্ধি করলে এমন প্রাণহানি কমানো সম্ভব।

এ ঘটনায় দৈলং গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিরোদ দাসের প্রতিবেশীরা জানান, তিনি একজন সৎ, পরিশ্রমী এবং শান্তিপ্রিয় মানুষ ছিলেন। তার মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোক ও বেদনাবিধুর পরিবেশ বিরাজ করছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post