কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ঘটে গেল এক নজিরবিহীন ঘটনা—মাত্র শখের বসে পাঁচ বন্ধু মিলে তৈরি করলেন দুইটি বিশাল আকারের শিঙাড়া, যার প্রতিটির ওজন প্রায় ৪ কেজি করে, মোট ৮ কেজি! অপ্রচলিত এই পদক্ষেপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই, হোটেলে ভিড় জমাতে শুরু করে উৎসুক জনতা। যেন ছোটখাটো কোনো উৎসব!
এই ব্যতিক্রমী আয়োজনটি হয়েছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার আশুতিয়া পুরাতন বাজারে, স্থানীয় একটি হোটেলের সহায়তায়। পুরো দিনজুড়ে চলে শিঙাড়া তৈরির প্রক্রিয়া, যা যেন এক মজার উৎসবের রূপ নেয়।
এই ব্যতিক্রমী আয়োজনের নেপথ্যে ছিলেন উপজেলার সুখিয়া ইউনিয়নের কাওয়ালীকান্দা গ্রামের পাঁচ বন্ধু—মোফাজ্জল, অন্তর, মিজান, টুটুল ও দিদার। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি একেবারেই বিনোদন ও ব্যতিক্রম কিছু করার চিন্তা থেকেই করা হয়েছে।
শিঙাড়া তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয় ৪ কেজি মুরগির মাংস, পর্যাপ্ত আলু, গাজর, বাদাম, আটা, ময়দা ও বিভিন্ন ধরনের মসলা। প্রতিটি শিঙাড়া বানাতে ব্যয় হয় প্রায় দেড় হাজার টাকা করে, অর্থাৎ মোট ৩ হাজার টাকায় বানানো হয় এই দুই বিশালাকৃতির শিঙাড়া।
এই অভিনব আয়োজন সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে মোফাজ্জল বলেন, "আমরা সব সময়ই কিছু ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিতে পছন্দ করি। এই বড় শিঙাড়াগুলো বানানোর ভাবনা একেবারেই আনন্দের জন্য। আমরা কখনো ভাবিনি এটি এতটা সাড়া ফেলবে।"
এই ব্যতিক্রমী শিঙাড়া দেখতে এসে বিস্ময় প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দা জীবন। তিনি বলেন, “শিঙাড়াগুলো দেখে সত্যিই অবাক হয়েছি। জীবনে এত বড় শিঙাড়া কখনও দেখিনি। তাই চোখের দেখা দেখতে চলে এসেছি। এটা একদম ভাইরাল হওয়ার মতো ঘটনা।”
শিঙাড়া তৈরির সহযোগী ও হোটেলটির মালিক স্বপন মিয়া জানান, “বন্ধুরা যখন বড় শিঙাড়া বানানোর কথা বলল, তখন বিষয়টি চ্যালেঞ্জের মতো ছিল। তবে আমরা সফল হয়েছি। আমি নিজেও কখনো এত বড় শিঙাড়া বানাইনি। এখন আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। ভবিষ্যতে কেউ চাইলে এমন শিঙাড়া আবার বানিয়ে দিতে পারব।”
এই উদ্যোগ কেবল একটি ব্যতিক্রমী রান্না নয়, বরং তা হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আলোচিত ঘটনা। স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে এই আয়োজন। অনেকেই বলছেন, এমন সৃষ্টিশীলতা তরুণদের মাঝে নতুন কিছু করার আগ্রহ বাড়াবে।
এই আয়োজন প্রমাণ করে, আনন্দ করতে কোনো বড় আয়োজন বা খরচের প্রয়োজন নেই—শুধু দরকার ব্যতিক্রমী ভাবনা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা।
Post a Comment