স্টাফ রিপোর্টার ॥
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে নিরীহ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দায়েরের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার গুজাদিয়া আতকাপাড়া ঈদগাহ মাঠে এ কর্মসূচি পালন করেন গ্রামবাসী।
প্রায় তিন শতাধিক নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ এলাকাবাসী মানববন্ধনে অংশ নেন। তারা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। একই সঙ্গে, কোন প্রকার তদন্ত ছাড়া মামলা এফআইআর গ্রহণ ও চার্জশিট দাখিল করায় করিমগঞ্জ থানার ওসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
মিথ্যা মামলার অভিযোগ
গ্রামবাসীর অভিযোগ, গ্রামেরই আবু আনিস ফকির নামে এক ব্যক্তি ১৯ জন নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, কৃষক, শ্রমিক, গৃহিণী এবং শিক্ষার্থী। তাদের দাবি, সেনাবাহিনী ও পুলিশে কর্মরত দুই ছেলের প্রভাব কাজে লাগিয়ে আবু আনিস ফকির গ্রামের অসহায় মানুষদের হয়রানি করছেন।
এ প্রসঙ্গে আব্দুল খালেক ফকির নামের এক গ্রামবাসী জানান, মুক্তিযোদ্ধা আবু আনিস ফকির তার প্রভাব খাটিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করতে চাইছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, তার ছেলেসহ পরিবারকেও মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে।
রাজনৈতিক নেতার বক্তব্য
স্থানীয় বিএনপি নেতা সিরাজ উদ্দিন বলেন, “শত বছরের পুরনো ঈদগাহ মাঠ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে নিরীহ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা অত্যন্ত দুঃখজনক। এমন মামলা কোনো তদন্ত ছাড়াই এফআইআর হওয়া এবং চার্জশিট দাখিল করায় বিস্মিত হয়েছি। আমরা অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার ও গ্রামবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”
গ্রামবাসীর ক্ষোভ
প্রতিবাদ সভায় কলেজ শিক্ষার্থী ও রোভার স্কাউট সদস্য আলম ফকির বলেন, তাকে এবং তার মাকে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “গ্রামের ঈদগাহ মাঠের দাবিতে আমরা সোচ্চার ছিলাম। আর সেই কারণে আমাদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।”
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া আরও অনেকে বলেন, এ মামলার মাধ্যমে এলাকার সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা চলছে। এতে করে গ্রামের নারী-পুরুষসহ সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযুক্তের বক্তব্য
অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধা আবু আনিস ফকির নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, “এর আগে তারা আমাকে নানা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। আমি এখন পাল্টা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আরও কয়েকটি মামলা করা হবে। ঈদগাহ মাঠের জমিটি আমার দাবি করা জমি।”
গ্রামবাসীর দাবি
মানববন্ধন শেষে গ্রামবাসী একসঙ্গে ঘোষণা দেন, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তারা প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
Post a Comment