অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস উইং শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন সম্পূর্ণ নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। দেশের জনগণের প্রতি এটি অন্তর্বর্তী সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার, যা দেশের গণতন্ত্রের অটল ভিত্তি নিশ্চিত করবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনের কোনো বিলম্ব বা বাধা রোধ করার জন্য যে কোনো ষড়যন্ত্র, প্রতিবন্ধকতা বা প্রচেষ্টা স্বচ্ছভাবে প্রতিহত করা হবে। গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণ ও সরকার একত্রিতভাবে এই প্রক্রিয়াকে সফল করতে কাজ করবে। জনগণের ইচ্ছা সর্বদা প্রাধান্য পাবে এবং কোনো অশুভ শক্তিকে দেশের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে দেওয়া হবে না।
অন্তর্বর্তী সরকার আশ্বস্ত করেছে যে, এই নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়ায় কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি বা পদমর্যাদার কারও জবাবদিহিতা এড়িয়ে যেতে পারবে না। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং দ্রুততা নিশ্চিত করা হবে। প্রভাবশালী কারও হস্তক্ষেপ ছাড়া জনগণের ন্যায্য ভোটের অধিকার রক্ষা করা হবে।
এ সময়, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, এই সংকটময় সময়ে নুরুল হক নুর, তার দলের আহত সদস্যগণ এবং তাদের পরিবারদের সঙ্গে পুরো জাতির পূর্ণ সমর্থন ও প্রার্থনা রয়েছে। নুরুল হক নুর দেশের যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে এক ইতিহাস রচনা করেছেন। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় তিনি ছাত্রনেতা হিসেবে দেশের যুবসমাজকে সংগঠিত করেছিলেন, বিভিন্ন মত ও কণ্ঠকে একত্রিত করেছিলেন এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে নির্ভীকভাবে দাঁড়িয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে শক্তিশালী করেছিলেন।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, জনগণকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে যে, অন্তর্বর্তী সরকার সব ধরনের নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সময়মতো অনুষ্ঠিত হবে। সরকারের লক্ষ্য দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এবং জনগণের ভোটাধিকার রক্ষা করা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘোষণা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন বিলম্বিত হলে তা দেশের অর্থনীতি, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিতে প্রভাব ফেলতে পারে। এ কারণে, অন্তর্বর্তী সরকারের এই দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দেশের জন্য ইতিবাচক বার্তা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
এই ঘোষণার মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে শান্তি ও আশ্বাস দেয়া হয়েছে যে, নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হবে। সকল রাজনৈতিক দল, ভোটার এবং জনগণকে দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করতে হবে। রাজনৈতিক সহিংসতা ও অশান্তি রোধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এছাড়া, বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, নির্বাচনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত যে কোনো প্রভাবশালী বা সরকারি পদমর্যাদার ব্যক্তি তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবে না। প্রভাবশালী কেউই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারবে না। জনগণ এবং সরকারের যৌথ উদ্যোগে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে, যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণ তাদের ন্যায্য ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে সক্ষম হবে। নির্বাচনের ফলাফল দেশবাসীর স্বার্থে হবে এবং গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে। দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সরকারি পক্ষের এই ঘোষণা দেশের নাগরিকদের মধ্যে আশার আলো জ্বালিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই দৃঢ় নিশ্চয়তা দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা।
Post a Comment