জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব থেকে:
কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে দুই চিহ্নিত ছিনতাইকারীকে জনতা হাতেনাতে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে রেলস্টেশনের ওভারব্রিজের ওপর এ ঘটনা ঘটে।
আটক হওয়া দুজন হলেন—নরসিংদী সদর উপজেলার বাহের চর এলাকার মৃত মনির মিয়ার ছেলে আরিফ মিয়া (২০) এবং নোয়াখালী মাইজদী থানার ভয়পুণ্ডপুর গ্রামের খোকন মিয়ার ছেলে জাবেদ মিয়া (২০)।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওইদিন বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার দুই বাসিন্দা ভৈরবে বিয়ের কেনাকাটা শেষে ট্রেনে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে রেলস্টেশনে আসেন। তারা ওভারব্রিজ পার হয়ে ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারীরা পথরোধ করে তাদের কাছ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিতে চায়।
এ সময় ভুক্তভোগীরা চিৎকার করলে স্টেশন চত্বরে অবস্থানরত যাত্রীরা এবং স্থানীয়রা ছুটে এসে দুই ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন। এরপর উত্তেজিত জনতা তাদের গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
রেলওয়ে পুলিশের অবস্থান
ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাইদ আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,
"স্থানীয়দের সহায়তায় রেলস্টেশনের ওভারব্রিজে ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। জনতা তাদের ধরে ফেলে এবং খবর পেয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আটককৃতদের থানায় নিয়ে আসে।"
তিনি আরও জানান,
"জাবেদ মিয়া ও আরিফ মিয়া পূর্বপরিচিত ছিনতাইকারী। তাদের নামে একাধিক ছিনতাই ও চুরির মামলা রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।"
ছিনতাইকারীদের পরিচিতি ও পূর্ব ইতিহাস
আটক আরিফ ও জাবেদ মূলত আন্তঃজেলা ছিনতাই চক্রের সদস্য বলে ধারণা করছে পুলিশ। এর আগেও এরা রাজধানী ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা অঞ্চলে নানা অপরাধে জড়িত ছিল বলে পুলিশের একটি গোপন সূত্রে জানা গেছে। তাদের গতিবিধি ও যোগাযোগ নেটওয়ার্ক খতিয়ে দেখতে কাজ করছে রেলওয়ে থানার তদন্ত বিভাগ।
ছিনতাই প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও পুলিশের পরামর্শ
রেলওয়ে থানা পুলিশ সাধারণ যাত্রীদের উদ্দেশ্যে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছে—স্টেশন বা ওভারব্রিজ এলাকায় অপরিচিত কাউকে সন্দেহজনক আচরণ করতে দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে কর্তৃপক্ষ বা পুলিশের কাছে জানান।
বিশেষ করে ব্যস্ত সময়ে অথবা সন্ধ্যার পর এসব এলাকায় যাত্রীর সংখ্যা কমে গেলে অপরাধীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে।
স্থানীয়দের প্রশংসা
স্থানীয়রা এই ঘটনায় সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে যে ধরনের সচেতনতা ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, তা প্রশংসার দাবি রাখে। জনতার উপস্থিতি এবং দ্রুত হস্তক্ষেপ না হলে হয়তো মূল্যবান সম্পদ খোয়া যেত এবং যাত্রীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতেন।
Post a Comment