ঘরে বসেই পাগলা মসজিদে দান, চালু হলো অফিশিয়াল ওয়েবসাইট
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে দান করা এখন আরও সহজ ও আধুনিক হলো। প্রযুক্তির সহায়তায় ঘরে বসেই দেশ-বিদেশ থেকে অনলাইনে দান পাঠানোর সুযোগ করে দিল পাগলা মসজিদ কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (৪ জুলাই) এই সুবিধা চালুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক এবং পাগলা মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্সের সভাপতি ফৌজিয়া খান।
নতুনভাবে চালু হওয়া মসজিদের নিজস্ব ওয়েবসাইট www.paglamosque.org-এর মাধ্যমে দানকারীরা যেকোনো স্থান থেকে বিকাশসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে অনুদান পাঠাতে পারবেন। পাশাপাশি এই ওয়েবসাইটে মসজিদের ইতিহাস, নামাজের সময়সূচি এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সহজেই পাওয়া যাবে।
🔔 আধুনিক যুগে দানের নতুন ধারা
পাগলা মসজিদের এই ডিজিটাল রূপান্তর দেশজুড়ে প্রশংসিত হয়েছে। ওয়েবসাইটটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক নিজেই অনুদানের অংশ হিসেবে বিকাশের মাধ্যমে ৫ হাজার ৪০০ টাকা পাঠান, যা মসজিদের পেমেন্ট গেটওয়ে সিস্টেমের কার্যকারিতা প্রমাণ করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মুকিত সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মসজিদ কমিটির সদস্য সচিব মো. এরশাদ মিয়া এবং বিশিষ্ট ইসলামি নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
দোয়া পরিচালনা করেন মসজিদের খতিব মাওলানা আশরাফ আলী। উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য অধ্যাপক রমজান আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সভাপতি হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসাইন তালুকদার, আল-জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার মুহতামিম মাওলানা শাব্বির আহমদ রশিদ, কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেস ক্লাবের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সভাপতি ইকরাম হোসাইন।
🕌 পাগলা মসজিদের গৌরবময় ইতিহাস
কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম প্রান্তে, নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত পাগলা মসজিদ বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। মসজিদটি শুধুমাত্র ধর্মীয় কেন্দ্র নয়, বরং দেশের মানুষের আবেগ ও বিশ্বাসের একটি প্রতীক।
প্রতি সপ্তাহে দানসিন্দুক খোলার সময় লক্ষাধিক টাকার অনুদান পাওয়া যায়। এমনকি কিছু সময় কোটি টাকার বেশি দান জমা পড়ে, যা প্রমাণ করে দেশের মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা কতটা গভীর এই মসজিদকে ঘিরে।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ এই মসজিদকে সম্মান করে এবং দান করে থাকে। নতুন এই অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও এখন আরও সহজে অংশ নিতে পারবেন এই সওয়াবের কাজে।
🌐 প্রযুক্তির ছোঁয়ায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান
এই উদ্যোগ শুধুমাত্র দান সংগ্রহের একটি উপায় নয়, বরং এটি একটি বড় সামাজিক বার্তাও বহন করে—ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোরও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়া জরুরি। সরকারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এমন উদ্ভাবন নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণার উৎস।
এ উদ্যোগের মাধ্যমে পাগলা মসজিদ হয়ে উঠল দেশের প্রথম পর্যায়ের মসজিদগুলোর মধ্যে একটি, যারা অনলাইনে দান সংগ্রহের পূর্ণাঙ্গ ও নিরাপদ পদ্ধতি চালু করেছে। ওয়েবসাইটটি দেশ-বিদেশের কোটি মুসল্লিকে সম্পৃক্ত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
Post a Comment