ভৈরবে ৯০০ কৃষক-কৃষাণীর মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ

ভৈরব প্রতিনিধি ; জয়নাল আবেদীন রিটন 
সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার ৯০০ কৃষক-কৃষাণীকে রোপা আমন মৌসুমের জন্য প্রয়োজনীয় চারা, বীজ এবং রাসায়নিক সার দেওয়া হয়।

রবিবার সকালে উপজেলা পরিষদের বঙ্গবন্ধু হল রুমে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই উপকরণ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শবনম শারমিন। এছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ের সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ও উপকারভোগী কৃষক-কৃষাণীরাও অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

বিতরণকৃত উপকরণ:

কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেক কৃষককে দেওয়া হয়—

রোপা আমনের ৫ কেজি বীজ

মরিচের ১০ গ্রাম বীজ

৫ কেজি করে ডিএপি ও এমওপি সার

নারিকেল ও তালের চারা ৫টি করে

গ্রীষ্মকালীন ৫ ধরনের সবজির বীজ


এই সহায়তার মাধ্যমে রোপা আমন ধানসহ মৌসুমি সবজি এবং ফল উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েছে কৃষি বিভাগ।

অভিযোগ: তালিকা তৈরিতে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন

তবে প্রণোদনা বিতরণ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন কৃষক। শিবপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের কৃষক শাহজাহান মিয়া বলেন, “কৃষি কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে সঠিক যাচাই না করেই প্রণোদনার তালিকা তৈরি করেছেন। ফলে অনেক প্রকৃত কৃষক বঞ্চিত হয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমার অনুরোধ থাকবে ইউএনও স্যার এবং কৃষি অফিসার যেন ভবিষ্যতে এ বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেন, যাতে প্রকৃত কৃষকরা এ ধরনের সহায়তা থেকে বাদ না পড়ে।”

কৃষকদের প্রতি দিকনির্দেশনা

কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বিতরণকৃত বীজ ও সার সঠিকভাবে ব্যবহার করার জন্য কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনারা লাইন অনুযায়ী রোপণ করবেন এবং প্রয়োজনে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে পরামর্শ নিবেন। এতে উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি আপনারাও লাভবান হবেন।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শবনম শারমিন বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের জন্য যে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে, তা সময়মতো ব্যবহার করতে হবে। এই বীজগুলো স্বল্প মেয়াদী, তাই দেরি করলে বীজের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে কৃষক যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তেমনি কৃষির উৎপাদনেও প্রভাব পড়বে।”

কৃষিতে স্বনির্ভরতা অর্জনে সরকারের লক্ষ্য

২০২৪-২৫ অর্থবছরে রোপা আমন, মরিচ, নারিকেল, তাল, আম, নিম, বেল, জাম ও কাঠালের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সরকার এই প্রণোদনা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এসব কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষি খাতে উৎপাদন বাড়িয়ে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা সম্ভব হবে।#ভৈরব #কৃষি_প্রণোদনা #বীজ_বিতরণ #সার_বিতরণ #বাংলাদেশ_কৃষি #কৃষকদের_অধিকার

Post a Comment

Previous Post Next Post