কিশোরগঞ্জে কোভিড-১৯ শনাক্তে পরীক্ষার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে। শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চালু হওয়া এ উদ্যোগ স্থানীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. অভিজিত শর্ম্মা।
তিনি জানিয়েছেন, পরীক্ষার প্রাথমিক ধাপ হিসেবে স্বাস্থ্য বিভাগ ৩০০টি করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিট সরবরাহ করেছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য উপজেলা ও স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রেও পরীক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।
সিভিল সার্জনের ভাষায়, “আমরা এখনো কোনো করোনা রোগী শনাক্ত করিনি। তবে ভবিষ্যতের ঝুঁকি মোকাবেলায় সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সন্দেহজনক উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত পরীক্ষা করানোর জন্য সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে।”
গত তিন বছর ধরে কিশোরগঞ্জ জেলায় করোনা সংক্রমণের হার প্রায় শূন্যের কোটায় রয়েছে। ২০২২ সালের অক্টোবরের পর থেকে কোনো নতুন রোগী শনাক্ত হয়নি। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ মনে করছে, করোনা ভাইরাসের মিউটেশন বা নতুন ভ্যারিয়েন্টের আশঙ্কা মাথায় রেখে আবারও পরীক্ষা শুরু করা জরুরি।
ডা. অভিজিত শর্ম্মা আরও বলেন, “আমরা সকল স্বাস্থ্যকর্মীকে সচেতনতা বৃদ্ধির নির্দেশনা দিয়েছি। গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। অপ্রয়োজনে জনসমাগম এড়িয়ে চলা এবং মাস্ক পরিধান ও হাত ধোয়ার অভ্যাসকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।”
এদিকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকার জানান, “করোনা পরীক্ষার জন্য সকল প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আমরা যে কোনো সময় পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারব।”
তিনি আরও জানান, “প্রাথমিকভাবে ১১টি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এই সংখ্যা বাড়িয়ে ২৫টি করা হবে। রোগীর সংখ্যা বাড়লে আরও শয্যা বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত জনবল নিয়োগের বিষয়েও আমরা প্রস্তুত রয়েছি।”
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদিও এখন সংক্রমণের হার অনেক কম, তবুও করোনা ভাইরাসের পুনরায় বিস্তার ঠেকাতে সচেতনতা ও আগাম প্রস্তুতি গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষার মাধ্যমে দ্রুত শনাক্তকরণ হলে রোগ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে এবং হাসপাতালগুলোর ওপর চাপও হ্রাস পাবে।
জেলার বাসিন্দাদের জন্য এটি একটি ইতিবাচক খবর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অনেক দিন ধরে এখানকার মানুষকে করোনার পরীক্ষার জন্য অন্য জেলায় যেতে হতো। এখন স্থানীয়ভাবে এ সেবা চালু হওয়ায় সময় ও খরচ উভয়ই কমবে।
সাধারণ জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। যে কেউ জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা বা শ্বাসকষ্টে ভুগলে দ্রুত হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।#কিশোরগঞ্জ #করোনা_পরীক্ষা #স্বাস্থ্য_সেবা #আইসোলেশন_বেড #COVID19_Bangladesh #করোনা_সতর্কতা #স্বাস্থ্য_বিধি #বাংলাদেশ_সংবাদ
Post a Comment