হোসেনপুরে সেচ পাম্পের ট্রান্সফরমার চুরি, বিপাকে কৃষকরা

কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার দক্ষিণ গোবিন্দপুর এলাকায় কৃষকদের সেচ কাজে ব্যবহৃত দুটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রান্সফরমার চুরি হয়ে গেছে। এই ঘটনার ফলে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে তীব্র উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকলে আসন্ন চাষাবাদ ব্যাহত হবে।

জানা গেছে, দক্ষিণ গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক আরাবুল ইসলাম নিজের এবং আশপাশের জমির সেচ সুবিধার জন্য একটি নতুন সেচ পাম্প স্থাপন করেন। এই পাম্প চালাতে স্থাপন করা হয়েছিল দুটি ৫ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সফরমার। তবে সম্প্রতি তিনি মাঠে গিয়ে দেখতে পান, সেচ পাম্পে বিদ্যুৎ নেই। পরে খুঁটি চেক করতে গিয়ে দেখতে পান ট্রান্সফরমার দুটি খোলা এবং উধাও। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে তিনি পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির স্থানীয় অফিসে জানান।

খবর পেয়ে হোসেনপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির সহকারী লাইনম্যান ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, খুঁটির ওপর থেকে দুটি ৫ কেভির ট্রান্সফরমার চুরি হয়ে গেছে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

কৃষক আরাবুল ইসলাম বলেন, “আমি ধারদেনা করে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ করে গত বছর সেচ পাম্প চালু করেছিলাম। এখনও দেনা শোধ হয়নি। এর মধ্যে ট্রান্সফরমার চুরি হয়ে যাওয়ায় আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। শুধু আমি নই, আশপাশের অনেক কৃষক এখন চরম সংকটে পড়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমি যখন সেচ পাম্পের আবেদন করি, তখন এলাকার কিছু ব্যক্তি এর বিরোধিতা করেছিল। এখন এই চুরির পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার।”

স্থানীয় বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, সেচ ব্যবস্থা ব্যাহত হলে ধান ও সবজির মৌসুমে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবেন এলাকার কৃষকেরা। তবে দ্রুত ট্রান্সফরমার পুনঃস্থাপন করা হলে এই ক্ষতির আশঙ্কা কিছুটা কমে আসবে বলে মত দিয়েছেন তারা।

ঘটনার বিষয়ে হোসেনপুর থানায় গতকাল শুক্রবার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছেন আরাবুল ইসলাম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মারুফ হোসেন বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখছি। জড়িতদের খুঁজে বের করতে পুলিশের একটি দল কাজ শুরু করেছে।”

অন্যদিকে, হোসেনপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম মো. সোহেল রানার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। প্রথমবার ফোনে তিনি ‘পরে কথা বলবেন’ বলে জানালেও এক ঘণ্টা পর যোগাযোগ করলে তিনি কল কেটে দেন।

এদিকে স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীল আচরণ কাম্য। চুরি হওয়া ট্রান্সফরমারগুলো দ্রুত প্রতিস্থাপন না করলে আসন্ন বোরো ও শীতকালীন সবজি চাষে ভয়াবহ ক্ষতি হবে।#হোসেনপুর #ট্রান্সফরমারচুরি #সেচসংকট #কৃষকসংকট #বাংলাদেশকৃষি #স্থানীয়সংবাদ #পল্লীবিদ্যুৎ

Post a Comment

Previous Post Next Post