কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে পুকুরে ডুবে দুই বছরের শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু।হ্যাশট্যাগ: #কিশোরগঞ্জ #শিশুমৃত্যু #দুর্ঘটনা #বাংলাদেশনিউজ #স্থানীয়সংবাদ

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে। মাত্র দুই বছর বয়সী শিশু আরিয়ান আহম্মেদ দোয়াদ পুকুরে ডুবে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ভিটিপাড়া মাইজহাটি গ্রামের সরকার বাড়িতে।

নিহত দোয়াদ ওই গ্রামের মো. রুবেলের দ্বিতীয় সন্তান। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আজ রোববার (১৮ মে) সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে শিশু দোয়াদ পরিবারের অজান্তে খেলার ছলে বাড়ির পাশের পুকুরপাড়ে চলে যায়। কিছু সময় পর পরিবারের সদস্যরা তাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তার নিথর দেহ দেখতে পান স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে শিশুটিকে উদ্ধার করে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শিশুর মৃত্যুতে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মায়ের আহাজারি আর বাবার নির্বাক হয়ে যাওয়া হৃদয়বিদারক চিত্র সৃষ্টি করেছে এলাকায়। প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শোকের ছাপ স্পষ্ট।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজসেবকরা জানান, শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আমাদের আরও সচেতন হওয়া জরুরি। বিশেষ করে বাড়ির পাশে পুকুর, ডোবা বা জলাশয় থাকলে সেখানে বাড়তি নজরদারি প্রয়োজন।

এ বিষয়ে বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা পরিবারটির পাশে রয়েছি এবং তাদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি।”

স্থানীয় থানার একজন কর্মকর্তা জানান, এটি নিছক একটি দুর্ঘটনা। পরিবার থেকে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করা হয়নি, তবু নিয়ম অনুযায়ী প্রাথমিক তদন্ত করে ঘটনাটি নথিভুক্ত করা হবে।

উল্লেখ্য, দেশে প্রতি বছরই এ ধরনের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এবং পুকুর, খাল বা ডোবার পাশে বসবাসকারী পরিবারগুলোতে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি সতর্কতা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোট শিশুদের একা বাইরে খেলতে না দেওয়া এবং বাড়ির আশেপাশের জলাশয়গুলোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এই দুর্ঘটনাগুলোকে প্রতিরোধযোগ্য বলেই মনে করেন তারা।

এই ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে পারিবারিক সচেতনতা, শিশুদের প্রতি নিরবিচারে নজরদারি এবং স্থানীয় পর্যায়ে নিরাপত্তা উদ্যোগ গ্রহণ একান্ত প্রয়োজন। ছোট্ট দোয়াদের মতো আরও অনেক শিশুর প্রাণ যেন না ঝরে পড়ে, সে জন্য সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলা জরুরি হয়ে উঠেছে।

শোকসন্তপ্ত পরিবারটির প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা রইল।

Post a Comment

Previous Post Next Post