কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া পৌর বাজারে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এবার আধুনিক প্রযুক্তির আশ্রয় নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। বাজার এলাকায় স্থাপন করা হচ্ছে ৪৫টি ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা, যা নিরাপত্তা ব্যবস্থায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই পৌর বাজারের ব্যবসায়ীরা এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাদের এই দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকারের মাননীয় আইন উপদেষ্টার প্রাইভেট সেক্রেটারি (পিএস) সারোয়ার আলমের উদ্যোগে প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন কাজ শুরু হয়। প্রথম ধাপে বাজারের প্রধান সড়ক, গুরুত্বপূর্ণ মোড়, প্রবেশপথ ও জনসমাগমপূর্ণ এলাকাগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে ক্যামেরা বসানো হচ্ছে।
এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন তদারকি করছেন পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী নাজমুল হক জিসান। তিনি জানিয়েছেন, “দীর্ঘদিনের একটি প্রয়োজনীয় দাবি বাস্তবায়ন হচ্ছে। আগামী দুই দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে। এরপর পুরো বাজার এলাকাটি থাকবে সরাসরি নজরদারির আওতায়।”
ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এই উদ্যোগে তাদের দোকানপাটের নিরাপত্তা যেমন নিশ্চিত হবে, তেমনি পথচারী ও ক্রেতারাও উপকৃত হবেন। একাধিক ব্যবসায়ী জানান, “প্রতিদিন নানা ধরনের মানুষ বাজারে আসে। চুরি, মোবাইল ছিনতাই কিংবা হঠাৎ করে ঝামেলা হয়। ক্যামেরা থাকলে এগুলোর পরিমাণ অনেক কমে যাবে। নিরাপত্তা নিয়ে যে উদ্বেগ ছিল, সেটা অনেকটাই কেটে যাবে।”
পৌর মেয়র ও পুলিশের পক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরাগুলো সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। ফলে যে কোনো ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এবং অপরাধীদের শনাক্ত করতে অনেকটাই সুবিধা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে পাকুন্দিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “যেকোনো অপরাধ সংঘটিত হলে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে খুব সহজেই অপরাধীদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এটা অপরাধ দমনে পুলিশকে অনেকটা এগিয়ে রাখবে।”
এছাড়া তিনি জানান, “ডিজিটাল মনিটরিংয়ের মাধ্যমে পুরো বাজারের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে। এতে শুধু অপরাধ দমন নয়, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাও উন্নত হবে।”
পৌর বাজারের সুরক্ষায় নেয়া এই কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাদের মতে, এই পদক্ষেপটি শুধুমাত্র চুরি বা ছিনতাই নয়, বরং সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
সহকারী প্রকৌশলী নাজমুল হক জিসান আরও বলেন, “এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পেছনে যিনি বিশেষ অবদান রেখেছেন, সেই সারোয়ার আলম স্যারের প্রতি ব্যবসায়ী সমাজের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তাঁর সহায়তায় আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করতে যাচ্ছি, যা পৌরসভার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।”
পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত পাকুন্দিয়া বাজারে প্রতিদিন শত শত মানুষ আসা-যাওয়া করে। তাই আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বাজারের প্রতিটি মোড় ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নজরদারির এই উদ্যোগকে সময়োপযোগী ও জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।#পাকুন্দিয়া #সিসিক্যামেরা #বাজারনিরাপত্তা #ক্রাইমপ্রিভেনশন #কিশোরগঞ্জ #পৌরসভা #বাংলাদেশনিউজ
Post a Comment