কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় টর্চ লাইট চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল হিরামন নামে এক যুবকের।

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হিরামন (২৩) নামের এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার কোদালিয়া গ্রামে নিজ বাড়িতে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহত হিরামন ছিলেন কোদালিয়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে। পেশায় তিনি একজন কৃষক ছিলেন এবং প্রতিদিনের মতো ওইদিনও ঘরের বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত ছিলেন বলে জানান স্থানীয়রা।

পাকুন্দিয়া থানা সূত্রে জানা গেছে, সকালে হিরামন তার নিজ ঘরে থাকা একটি টর্চ লাইট চার্জ দিতে যান। এ সময় অসাবধানতাবশত তিনি বিদ্যুতায়িত হন। পরিবারের সদস্যরা চিৎকার শুনে তাৎক্ষণিকভাবে তার ঘরে গিয়ে তাকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট অবস্থায় দেখতে পান। এরপর তড়িঘড়ি করে স্থানীয়রা তাকে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হিরামনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ প্রসঙ্গে পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাখাওয়াৎ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ না থাকায় এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি দুর্ঘটনাবশত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু বলে ধারণা করা হচ্ছে।”

স্থানীয়রা জানান, হিরামন ছিলেন শান্ত স্বভাবের একজন যুবক। তিনি মূলত কৃষিকাজ ও বাড়ির নানা কাজে যুক্ত ছিলেন। তার অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবেশীরা জানান, হিরামন সবসময় পরিবারের খেয়াল রাখতেন এবং সমাজেও ছিলেন জনপ্রিয় একজন তরুণ।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একজন কর্মকর্তা জানান, অনেক সময় ঘরে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিতে সঠিকভাবে ইলেকট্রিক সংযোগ না থাকলে বা তারের ত্রুটির কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সকলকে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘরে ব্যবহৃত চার্জার বা বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্র ব্যবহারের সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে প্রাণহানির ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। নিয়মিত ইলেকট্রিক তার পরীক্ষা করা, ওয়্যারিংয়ের ত্রুটি চিহ্নিত করে দ্রুত ঠিক করা এবং ভেজা হাতে কোনও বিদ্যুৎচালিত যন্ত্র ব্যবহার না করাই উচিত।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়। প্রতিবছর অসচেতনতা এবং সুরক্ষার অভাবে শতাধিক মানুষ এভাবে প্রাণ হারান। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে পুরাতন বা অব্যবস্থাপনায় তৈরি বৈদ্যুতিক সংযোগ ব্যবহারের ফলে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।

এদিকে হিরামনের মৃত্যুতে তার পরিবারে নেমে এসেছে গভীর শোক। তরুণ বয়সে এমন মৃত্যু কেউই মেনে নিতে পারছেন না। তার মা-বাবা এবং ঘনিষ্ঠরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। এলাকায় তার জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানোর উপর গুরুত্ব দিয়েছেন

।#বিদ্যুৎস্পৃষ্ট #হিরামনেরমৃত্যু #পাকুন্দিয়া #দুর্ঘটনা #বাংলাদেশসংবাদ #গ্রামীণনিরাপত্তা #টর্চলাইটদুর্ঘটনা #বাংলাদেশনিউজ #পেশাদারসংবাদ

Post a Comment

Previous Post Next Post