ভৈরব রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পৌঁছার পর চলন্ত ট্রেনে অসুস্থ হয়ে পড়া এক যাত্রী মৃত্যুবরণ করেছেন

জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব।।
ভৈরব রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পৌঁছার পর চলন্ত ট্রেনে অসুস্থ হয়ে পড়া এক যাত্রী মৃত্যুবরণ করেছেন। আজ বুধবার (২৯ মে) বিকেল পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মৃত ব্যক্তির নাম মনির হোসেন (৫১)। তিনি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার আব্দুল মালেক মিয়ার ছেলে। নিহত মনিরের সঙ্গে ছিলেন তার বোন তাসলিমা বেগম।

ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, মনির হোসেন ও তার বোন তাসলিমা বিকাল তিনটার পর ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। ট্রেনটি মেথিকান্দা স্টেশন অতিক্রম করার পর হঠাৎ মনিরের বুকে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। সঙ্গে সঙ্গে তারা ট্রেনের স্টাফ ও ভৈরব স্টেশন মাস্টার মো. ইউসুফ মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু ফোনে কোনো সাড়া না পেয়ে, ভৈরব স্টেশনে ট্রেন থামার পর স্টেশন মাস্টারের কক্ষে গিয়ে অন্য একজনকে পাওয়া গেলেও তিনি সাহায্য করেননি বলে অভিযোগ করেন মনিরের বোন।

তাসলিমা বলেন, “আমার ভাই অসুস্থ হয়ে পড়ার পর ট্রেনে চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। স্টেশনেও কেউ আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। বারবার ফোন করেও স্টেশন মাস্টারকে পাইনি।”

পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় মনির হোসেনকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রেজিনা বেগম পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “রোগীকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।”

মনির হোসেন দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন এবং আট মাস আগে তার বাইপাস সার্জারি করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।

ঘটনা প্রসঙ্গে ভৈরব রেলস্টেশন মাস্টার মো. ইউসুফ মিয়া বলেন, “এ ধরনের জরুরি অবস্থায় যাত্রী বা স্বজনরা সহকারী কেবিন মাস্টারকে জানালে তিনি রেলওয়ে পুলিশকে মেমো দেবেন এবং তারা প্রয়োজনীয় সহায়তা করবে।”

তবে মনিরের পরিবার দাবি করেছে, ঘটনার সময় এমন কোনো সহযোগিতা তারা পাননি।

ঘটনার পর মৃতদেহ ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। মনিরের বোন তাসলিমা তার সঙ্গে রয়েছেন এবং পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে আন্তঃনগর ট্রেনে ও স্টেশনে যাত্রীদের জন্য জরুরি চিকিৎসা সহায়তা ব্যবস্থা নিয়ে। সংশ্লিষ্টদের অবহেলা ও উদাসীনতা যে যাত্রীর প্রাণহানির কারণ হতে পারে—এ ঘটনা তার একটি করুণ উদাহরণ।#ভৈরব #ট্রেনমৃত্যু #উপকূলএক্সপ্রেস #স্বাস্থ্যসেবা #রেলওয়ে #বাংলাদেশ

Post a Comment

Previous Post Next Post