কিশোরগঞ্জ, ২৯ মে — খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) মেধাবী ছাত্র সাফওয়ান আহমেদ ইফাজের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজে আজ দুপুরে ছাত্রদল আয়োজন করে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ।
দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিলে গুরুদয়াল কলেজ শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। মিছিলটি কলেজ চত্বর প্রদক্ষিণ করে কলেজ গেটের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগানে উত্তাল করে তোলেন পুরো এলাকা।
বিক্ষোভে ছাত্রদের স্লোগানে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ:
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা “শিক্ষা সন্ত্রাস একসাথে চলে না”, “এই ক্যাম্পাসে গুপ্ত রাজনীতি চলবে না”, “সন্ত্রাসীদের বিচার চাই”—এই ধরনের স্লোগান দিয়ে হামলার তীব্র নিন্দা জানান। বক্তারা অভিযোগ করেন, দেশের শিক্ষাঙ্গনে দিন দিন সন্ত্রাস ও গুপ্ত রাজনীতির প্রভাব বাড়ছে, যা ছাত্রদের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
সমাবেশে বক্তাদের দাবি:
বিক্ষোভ শেষে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, “ইফাজের ওপর এই বর্বরোচিত হামলা দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান সন্ত্রাসের নগ্ন চিত্র তুলে ধরেছে। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার সাহস না পায়।”
কে এই ইফাজ?
সাফওয়ান আহমেদ ইফাজ ছিলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বয়স মাত্র ২৫ বছর। ২৭ মে দুপুরে কুয়েটের মেইন গেটের পাশে অবস্থিত একটি চায়ের দোকানের সামনে হঠাৎ করেই মোটরসাইকেলে করে আসা একদল দুর্বৃত্ত তাঁর ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, হামলাকারীরা পরিকল্পিতভাবে ইফাজকে ঘিরে ধরে উপর্যুপরি কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে এবং দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আতঙ্কে কুয়েট ক্যাম্পাস:
এই নৃশংস ঘটনার পর থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে হলে সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা জরুরি।
ছাত্র রাজনীতিতে সহিংসতার প্রশ্ন:
বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা মনে করছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহিংসতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ছাত্র রাজনীতির নামে যদি কেউ নৃশংসতা বা হামলার সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সকলেই এমন ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরুর দাবি জানিয়েছেন।
প্রশাসনের প্রতি আহ্বান:
এদিকে কিশোরগঞ্জে ছাত্রদলের বিক্ষোভ থেকে বক্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিক পরিচয় না দেখে নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষাঙ্গনে নিরাপত্তাহীনতা বাড়বে এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হবে।
এই প্রতিবাদ কর্মসূচির মাধ্যমে কুয়েট ছাত্র ইফাজের ওপর হামলার বিচার দাবিতে দেশজুড়ে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভ বিরাজ করছে, তা আবারও প্রকাশ পেল।#ইফাজহামলা #ছাত্রদলবিক্ষোভ #গুরুদয়ালকলেজ #কুয়েট #সন্ত্রাসেরবিচারচাই #বাংলাদেশসংবাদ #প্রতিবাদ #শিক্ষাঅধিকার #CampusViolence
Post a Comment