কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুট্টা চাষে কৃষি বিপ্লব ঘটেছে। সরকারি ভর্তুকিতে মেশিন, বীজ ও সার বিতরণের ফলে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। পাশাপাশি আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার হয়েছে বাম্পার ফলন। বর্তমানে ক্ষেত থেকে ভুট্টা তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। বাজারে ভুট্টার দামও চাষিদের জন্য লাভজনক হওয়ায় খুশি তারা। সব মিলিয়ে ভৈরবের কৃষিতে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।
ভৈরব উপজেলার গজারিয়া ও সাদেকপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলজুড়ে এখন ভুট্টা ক্ষেতের মনোরম দৃশ্য দেখা যায়। কয়েক বছর আগেও এই অঞ্চলের কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী ছিলেন না নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে। কিন্তু সরকারিভাবে স্বল্পমূল্যে বীজ, সার ও যন্ত্রপাতি সরবরাহের উদ্যোগ কৃষকদের চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে। ফলস্বরূপ, গত বছর যেখানে ৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছিল, সেখানে এবার তা দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছে প্রায় ১০০ হেক্টর।
এক বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষে খরচ হয় মাত্র ৭ হাজার টাকা। গড়ে ৪০ মণ পর্যন্ত উৎপাদন পাওয়া যায়। বর্তমান বাজারে প্রতি মণ ভুট্টার দাম ১,৩০০ থেকে ১,৪০০ টাকা, যার ফলে আয় দাঁড়ায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি। ভুট্টা শুধু খাদ্যশস্য হিসেবে নয়, গাছও ব্যবহার করা যায় গোখাদ্য ও জ্বালানির কাজে। ফলে এই ফসলের বহুমুখী ব্যবহার কৃষকদের জন্য বাড়তি সুবিধা বয়ে আনছে।
কৃষকদের ভাষ্যমতে, ধানের তুলনায় ভুট্টা চাষে খরচ কম, পরিশ্রম কম, আর লাভ অনেক বেশি। এর পাশাপাশি রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাবও তুলনামূলকভাবে কম, যা চাষিদের জন্য অতিরিক্ত স্বস্তির কারণ।
উপজেলা কৃষি অফিসও কৃষকদের পাশে রয়েছে। কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম জানিয়েছেন, “মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন এবং রোগবালাই সম্পর্কে সচেতন করছেন। চাষিদের মাঝে আগ্রহ বাড়াতে আমরা সর্বাত্মক সহায়তা দিচ্ছি।”
স্থানীয় কৃষকদের আশা, এমন ফলন ও বাজার দর অব্যাহত থাকলে আগামী মৌসুমে ভুট্টা চাষ আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। এতে একদিকে যেমন কৃষকের আয় বাড়বে, অন্যদিকে গোটা অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
Post a Comment