কিশোরগঞ্জের নগুয়া হয়বতনগরে মসজিদের জানালার গ্রিল কেটে মুয়াজ্জিনের ২.৫ লক্ষ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি।

কিশোরগঞ্জ জেলার নগুয়া হয়বতনগর এলাকার বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদে (খিদমা হাসপাতালের পাশে) সম্প্রতি ঘটে গেছে একটি চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনা। গভীর রাতে মসজিদের একটি কক্ষের জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢুকে দুর্বৃত্তরা নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও মূল্যবান স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে গেছে। চুরি হওয়া অর্থ ও মালামালের মধ্যে ছিল মসজিদের অর্থ ছাড়াও মুয়াজ্জিন মাওলানা আসাদুল ইসলামের ব্যক্তিগত সঞ্চয় এবং তার স্ত্রীর অলংকার।

১৩ বছর ধরে মসজিদে খেদমত করে আসা মুয়াজ্জিন মাওলানা আসাদুল ইসলামের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায়। মাত্র ৯ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করেও তিনি ধীরে ধীরে কিছু টাকা জমিয়ে রেখেছিলেন ভবিষ্যতে নিজের জন্য একটি বাড়ি নির্মাণের আশায়। সেই অর্থই তিনি নিরাপদ মনে করে মসজিদের একটি রুমে রাখেন। দুর্ভাগ্যবশত, সেই অর্থই এক রাতে চুরি হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, তার স্ত্রীর সঞ্চিত স্বর্ণালংকারও একইসাথে নিয়ে গেছে চোরেরা।

ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, মসজিদের সংশ্লিষ্ট কক্ষটি সবসময় তালাবদ্ধ রাখা হতো এবং জানালায় গ্রিল বসানো ছিল। কিন্তু দুর্বৃত্তরা বিশেষ কৌশলে গ্রিল কেটে প্রবেশ করে। পরে তারা আলমারিতে রাখা নগদ অর্থ এবং একটি বাক্সে সংরক্ষিত স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।

মাওলানা আসাদুল বলেন, "আমি দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট করে যা জমিয়েছিলাম, এক রাতেই সব হারিয়ে ফেললাম। স্ত্রী-সন্তানের ভবিষ্যৎ আর নিজের ঘরের স্বপ্ন ছিল এই টাকার সাথে জড়িত। এখন আমি অসহায়।"

চুরি হওয়া টাকার মধ্যে মসজিদেরও একটি অংশ ছিল। বিভিন্ন মুসল্লিদের দান এবং মসজিদের উন্নয়নকাজের জন্য জমা রাখা এই অর্থও চুরির কবলে পড়ে। এ ঘটনায় স্থানীয় মুসল্লিদের মাঝে ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

এলাকাবাসী ও মসজিদ কমিটির দাবি, দ্রুত তদন্ত করে চোরদের শনাক্ত করতে হবে। মসজিদের আশপাশে যদি কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা থাকে, সেগুলো বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের শনাক্ত করা সম্ভব হতে পারে। তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, দ্রুত এই ঘটনার বিচার এবং চুরি যাওয়া অর্থ ও মালামাল উদ্ধারের ব্যবস্থা নিতে।

মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ঘটনার পর তারা অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিচ্ছেন। বিশেষ করে রাত্রিকালীন পাহারা, সিসিটিভি স্থাপন এবং দরজার নিরাপত্তা আরও জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

এদিকে স্থানীয়রা ভুক্তভোগী মুয়াজ্জিন মাওলানা আসাদুল ইসলামের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারা বলেন, “তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিরলসভাবে মসজিদের খেদমত করে যাচ্ছেন। এ ধরনের অন্যায় তার প্রাপ্য নয়। তার পাশে আমরা আছি।”

#কিশোরগঞ্জ #মসজিদচুরি #নান্দাইল #মুয়াজ্জিন #বাংলাদেশ_সংবাদ #সামাজিক_নিরাপত্তা #ধর্মীয়_প্রতিষ্ঠান #বায়তুলজান্নাত

Post a Comment

Previous Post Next Post