পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ২০ মে সোমবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে বৃষ্টির মধ্যে পার্বতী রানি বিশ্বাস প্রতিদিনের মতো ধনু নদীতে থালা-বাসন ধুতে গিয়েছিলেন। তবে এরপর থেকেই তাকে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবারের সদস্যরা প্রাথমিকভাবে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করলেও তার সন্ধান মেলেনি।
প্রতিবেশীরা জানান, পার্বতী নদীর পাড়ে গিয়ে হঠাৎ পা পিছলে পানিতে পড়ে যান বলে ধারণা করা হচ্ছে। সম্ভাব্য ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই স্থানীয়রা নদীতে তল্লাশি শুরু করে। তবে তীব্র স্রোত এবং আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় উদ্ধার কাজ ছিল অত্যন্ত কঠিন।
পরিস্থিতি বুঝে সন্ধ্যার দিকে স্থানীয়রা বিষয়টি ইটনা থানার পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসে অবহিত করে। কিশোরগঞ্জ সদর থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। রাত ৮টা পর্যন্ত একটানা চেষ্টার পরও নিখোঁজ নারীর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। নদীর প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধার কাজ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় পারিবারিক সদস্য ও স্থানীয়দের পরামর্শে।
দুই দিন পর, ২২ মে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে বেতেগা গ্রামের পাশের নমপাড়া এলাকার ধনু নদীতে একটি মরদেহ ভাসতে দেখা যায়। পরে স্থানীয়রা গিয়ে সেটি উদ্ধার করে এবং নিশ্চিত হন যে এটি নিখোঁজ পার্বতী রানি বিশ্বাসের মরদেহ।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয়রা জানান, বর্ষাকালে ধনু নদীর পানি ও স্রোত অনেক বেশি থাকে, ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকায় চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বৃষ্টির সময় আরও বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, “মরদেহটি উদ্ধারের পর আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এটি নিছক দুর্ঘটনা বলে মনে হচ্ছে, তবে পরিবারের পক্ষ থেকে যদি কোনো অভিযোগ আসে, তদন্ত করা হবে।”
এই ঘটনায় পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পার্বতী রানি বিশ্বাস ছিলেন একজন সাধারণ গৃহবধূ, যার অকাল মৃত্যুতে এলাকাবাসী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীতে এমন দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদী তীরবর্তী এলাকায় বসবাসরত মানুষদের সচেতনতা বাড়ানো এবং প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
#ধনু_নদী #ইটনা_সংবাদ #কিশোরগঞ্জ #নিখোঁজ #মরদেহ_উদ্ধার #বাংলাদেশ_নিউজ
Post a Comment