কিশোরগঞ্জ, (১০-০৫-২০২৫): বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণার পর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শহিদী মসজিদের সামনে শুরু হয়েছে বিজয়ের মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ। শনিবার রাত ১১ টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু হলেও এখন পর্যন্ত হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে মিছিল এখনো চলমান রয়েছে। এতে অংশ নিয়েছে নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন (ইশা), গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী ছাত্র সংগঠন এবং বিপুল সংখ্যক মাদরাসা শিক্ষার্থী।
মিছিলকারীরা জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে নানা ধরনের স্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করে তুলেছেন। ‘আওয়ামী লীগের পতন, গণমানুষের জয়’, ‘ইসলামী রাজনীতি বাঁচাও’, ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল শহিদী মসজিদের সামনে এসে মিলিত হয়। অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, এই নিষিদ্ধ ঘোষণার মাধ্যমে “জাতি বহু বছরের একটি কালো অধ্যায় থেকে মুক্তি পেয়েছে”।
নেতাদের প্রতিক্রিয়া
নাগরিক পার্টির (এনসিপি) স্থানীয় নেতা বলেন, “যে দলটি বছরের পর বছর ধরে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে, ইসলাম ও দেশের সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করেছে—তাদের নিষিদ্ধ হওয়া ছিল সময়ের দাবি। আজ সেই দাবি পূরণ হলো।”
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের (ইশা) নেতৃবৃন্দ বলেন, “আমরা বহুদিন ধরে ইসলামী শাসনের পক্ষে ও ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষার সংগ্রামে আছি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ায় ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠার পথ কিছুটা হলেও সুগম হলো।”
বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতারাও সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “জনগণ আজ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার আনন্দে রাস্তায় নেমেছে। এই দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।”
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি
বিজয় মিছিল ঘিরে কিশোরগঞ্জ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া
মিছিলে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষদের মধ্যেও ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। অনেকেই জানালার পাশে দাঁড়িয়ে, কেউবা মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে মিছিলের দৃশ্য উপভোগ করেন। স্থানীয় দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাও এই রাজনৈতিক পরিবর্তনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
Post a Comment