ঢাবি ছাত্র ও ছাত্রদল নেতা সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর সরকারি কলেজে ছাত্রদলের প্রতিবাদ ও মানববন্ধন।#ছাত্রদল #সাম্যহত্যা #ঢাবি #হোসেনপুর #বিচারদাবি #বাংলাদেশসংবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আহমেদ সাম্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর সরকারি কলেজে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে কলেজ ক্যাম্পাস ঘুরে এবং কলেজ গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করে তারা।

সাম্যের নৃশংস হত্যার বিচার দাবিতে দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ডাকে আয়োজিত প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবেই হোসেনপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদল এ কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধনে অংশ নেন কলেজ শাখার বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। তারা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে সাম্যের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, "শাহরিয়ার আহমেদ সাম্যের মতো একজন মেধাবী ছাত্র ও সংগঠনের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীকে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে, অথচ এখনো তার হত্যাকারীরা গ্রেপ্তার হয়নি। এটি শুধু ছাত্রদলের জন্য নয়, গোটা জাতির জন্যই উদ্বেগজনক। আমরা অবিলম্বে তার হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার চাই।"

প্রসঙ্গত, নিহত শাহরিয়ার আহমেদ সাম্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নিয়মিত ছাত্র। পাশাপাশি তিনি ছাত্রদলের স্যার এ এফ রহমান হল শাখার সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন।

ঘটনার দিন, ১৩ মে রাত আনুমানিক ১২টার দিকে শাহরিয়ার সাম্য বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একদল সন্ত্রাসীর হামলার শিকার হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরপরই তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ছাত্রদল নেতাদের অভিযোগ, এই হত্যাকাণ্ড একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক হামলা। তারা মনে করেন, সাম্য ছিলেন রাজনীতিতে সক্রিয় এবং জনপ্রিয় একজন তরুণ নেতা, যার বিকাশ থামিয়ে দিতে তাকে টার্গেট করা হয়েছিল।

এদিকে, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুধু হোসেনপুর নয়, সারা দেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একইদিনে একযোগে এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

হোসেনপুর কলেজের মানববন্ধনে বক্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় ছাত্রদল আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।”

পাঠক ও বিশ্লেষকদের মতে, সাম্য হত্যার ঘটনার দ্রুত এবং নিরপেক্ষ বিচার না হলে, শিক্ষাঙ্গনে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। এই প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত।

ছাত্ররাজনীতির পরিপূর্ণ সংস্কার এবং শিক্ষাঙ্গনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি এখন আরও জোরালো হয়ে উঠছে। এমন এক সময়ে সাম্যের মতো তরুণ নেতার জীবনপ্রদীপ নিভে যাওয়া দেশজুড়ে শোক ও ক্ষোভের ঢেউ তোলে।

Post a Comment

Previous Post Next Post