বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, যারা ক্ষমতার দম্ভে উদ্ধত হয়ে জনগণকে ভয় দেখাতে চান, তাদের মনে রাখা উচিত— নিরঙ্কুশ ক্ষমতা কেবল মহান আল্লাহর। জনগণই প্রকৃত মালিক, তাই জনগণের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র কখনো সফল হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হল মুক্তমঞ্চে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন প্রসঙ্গ
ডা. জাহিদ বলেন, "ফেব্রুয়ারিতে ঘোষিত নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য ভেতরে বাইরে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু এ দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ কোনো অন্যায় নির্বাচন হতে দেবে না। আগামী দিনে জনগণের ভোটে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন— এটাই আমাদের প্রত্যাশা।"
তিনি আরও বলেন, বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ হবে জনগণের বাংলাদেশ। এখানে থাকবে সবার সমান অধিকার, ন্যায়বিচার এবং গণতন্ত্রের পূর্ণ প্রতিষ্ঠা।
নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, "বিএনপি করার জন্য গর্বিত হোন। কারণ এই দল জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে জন্ম নিয়েছে। বিএনপি অতীতমুখী নয়, বরং ভবিষ্যত নির্মাণের রাজনীতি করে। মুক্তিযোদ্ধা, দেশপ্রেমিক এবং সাধারণ মানুষের দল বিএনপি সবসময়ই জনগণের পাশে থেকেছে।"
অন্যদিকে তিনি অভিযোগ করেন, দেশের আরেকটি রাজনৈতিক দল অতীতে একদলীয় শাসন চাপিয়ে দিয়েছিল। তারা জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল, আত্মসমর্পণ করেছিল বিদেশি শক্তির কাছে এবং জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছিল।
সমাবেশের চিত্র
ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একে এম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন— বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ও শরীফুল আলম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদারসহ জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতারা।
সভা শেষে এক বিশাল আনন্দ র্যালি বের করা হয়, যা নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। নেতাকর্মীরা হাতে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে এতে অংশ নেন। পুরো নগরজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
রাজনৈতিক বার্তা
সমাবেশ থেকে বিএনপি নেতারা স্পষ্ট করে দেন যে, আগামী দিনগুলোর রাজনীতি হবে গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকেন্দ্রিক। তারা বিশ্বাস করেন, জনগণই এই দেশের মালিক এবং সেই শক্তির কাছে সব স্বৈরাচারী প্রয়াস ভেস্তে যাবে।
বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির এই সমাবেশ শুধু প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং আসন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘিরে দলটির কৌশলগত অবস্থান প্রকাশের সুযোগ ছিল। ক্ষমতাসীনদের একনায়কতান্ত্রিক প্রবণতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সংকল্প এ সমাবেশ থেকে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।
Post a Comment