কিশোরগঞ্জে ১০ সেপ্টেম্বর বিএনপির ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল: নতুন নেতৃত্বের প্রত্যাশায় দলীয় নেতাকর্মীরা

কিশোরগঞ্জে ১০ সেপ্টেম্বর বিএনপির ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল: নতুন নেতৃত্বের প্রত্যাশায় দলীয় নেতাকর্মীরা
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর। জেলা শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে আয়োজিত এ কাউন্সিলকে ঘিরে ইতোমধ্যেই দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে।


---

প্রস্তুতি সভায় তারিখ ঘোষণা

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত এক প্রস্তুতি সভায় কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম। সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম সভা সঞ্চালনা করেন।

সভায় জেলা বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রস্তুতি সভায় জানানো হয়, মূলত ৬ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির কাউন্সিল আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল। তবে ওই দিনই পালিত হবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে গুরুত্ব দিয়ে জেলা বিএনপি কাউন্সিলের তারিখ পরিবর্তন করে ১০ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করেছে।


---

নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ের সুযোগ

কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিশেষ আগ্রহ দেখা দিয়েছে। তিন বছর পর এই আয়োজনকে ঘিরে সবাই আশা করছেন— নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের মাধ্যমে সাংগঠনিক কার্যক্রমে নতুন গতি আসবে।

সভায় বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন পর এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যা কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক পুনর্গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কাউন্সিলের মাধ্যমে তৃণমূল থেকে শুরু করে শীর্ষ নেতৃত্ব পর্যন্ত নতুন করে ঐক্যের স্রোত সৃষ্টি হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এক নেতা বলেন,

> “বিএনপির রাজনীতি সবসময় জনগণের অধিকার আদায়ের রাজনীতি। কিশোরগঞ্জে এই কাউন্সিল দলকে সুসংগঠিত করবে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নতুন উদ্যম যোগ করবে।”




---

সাংগঠনিক চ্যালেঞ্জ ও প্রত্যাশা

জেলা বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে সাংগঠনিক স্থবিরতায় ভুগছিল। নানা রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মামলা-মোকদ্দমা ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জেলার নেতাকর্মীরা সক্রিয় রাজনীতিতে আগের মতো ভূমিকা রাখতে পারেননি। সেই প্রেক্ষাপটে আসন্ন কাউন্সিলকে ঘিরে সবাই নতুন সম্ভাবনার কথা ভাবছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, জেলা পর্যায়ে কাউন্সিল শুধু নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি তৃণমূল নেতাকর্মীদের সক্রিয় করারও একটি বড় সুযোগ। স্থানীয় রাজনীতিতে বিএনপির অবস্থান মজবুত করতে এ আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।


---

কাউন্সিলের তাৎপর্য

কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই নেতাকর্মীরা এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। অনেকে মনে করছেন, এই আয়োজন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির জন্য রাজনৈতিক টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জাতীয় রাজনীতিতে বিএনপি যখন সরকারবিরোধী আন্দোলনে নতুন কৌশল খুঁজছে, তখন জেলা পর্যায়ে শক্তিশালী নেতৃত্ব অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। কিশোরগঞ্জের মতো গুরুত্বপূর্ণ জেলায় কাউন্সিল আয়োজন সেই প্রক্রিয়াকে আরও বেগবান করবে।

একজন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন,

> “কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির কাউন্সিল শুধু একটি আনুষ্ঠানিক আয়োজন নয়। বরং এটি ভবিষ্যৎ আন্দোলন ও সাংগঠনিক কাঠামোতে নতুন প্রাণ সঞ্চারের অন্যতম মাইলফলক।”




---

নেতাকর্মীদের উৎসাহ

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন কাউন্সিলে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেবেন। এদিন জেলার বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় বিএনপির শীর্ষ নেতাদেরও যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে।

কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলের নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। কেউ ব্যানার-ফেস্টুন তৈরি করছেন, কেউবা এলাকাভিত্তিক বৈঠকের মাধ্যমে কাউন্সিলে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post