জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব || ২১ জুলাই ২০২৫, সোমবার
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ছিনতাই করতে গিয়ে তিন যুবক জনতার হাতে আটক হয়েছেন।
সোমবার (২১ জুলাই) বিকেল পাঁচটার দিকে ভৈরব ত্রি-সেতুর নিচে কয়লা মহাল এলাকার পাশে এই ঘটনা ঘটে। আটককৃত তিন ছিনতাইকারী হলো—ভৈরবপুর উত্তর পাড়ার বাচ্চু মিয়ার ছেলে ইফরান মিয়া (২৫), মৃত সদয় মিয়ার ছেলে শোভন মিয়া (২৫) এবং লিটন মিয়ার ছেলে হিমেল মিয়া (২৪)।
আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে এসে ছিনতাইয়ের শিকার
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানার গদাইনগর গ্রামের বাসিন্দা শনির দাস (২৫) ও সাঞ্জয় দাস (২৬) সোমবার আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে বিকেলে ত্রি-সেতুর নিচে ঘুরতে যান।
তারা কয়লা মহালের পাশে পৌঁছালে হঠাৎ ওই তিন যুবক তাদের গতিরোধ করে এবং ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে মারধর শুরু করে। ছিনতাইকারীরা নিজেদের হাতে থাকা কাঁচি দিয়ে ভুক্তভোগীদের আঘাত করে, এবং তাদের মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
চিৎকারে ছুটে আসে মুসল্লিরা, রক্ষা পায় ভুক্তভোগীরা
ভুক্তভোগীদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন, বিশেষ করে হাজী আসমত আলী জামে মসজিদের মুসল্লিরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ছিনতাইকারীদের ধাওয়া করে।
ধাওয়া খেয়ে ছিনতাইকারীরা রিকশাযোগে ভুক্তভোগীদের চিতালালার দিকে নিয়ে যেতে চাইলেও মসজিদের সামনে ধরা পড়ে যায়।
জনতা তাদের আটক করে তল্লাশি চালিয়ে ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোন ও কিছু নগদ টাকা উদ্ধার করে। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হলে ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তিনজনকেই থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশের বক্তব্য
এ বিষয়ে ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সফিকুল ইসলাম জানান,
“ছিনতাইয়ের সময় জনতার সহযোগিতায় তিনজনকে চন্ডিবের এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ গ্রহণের পর প্রয়োজনীয় মামলা রুজু করে আদালতে প্রেরণ করা হবে।”
ভৈরবে ছিনতাই চক্র: উদ্বেগজনক সক্রিয়তা
স্থানীয়দের অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে ভৈরবের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে সেতুর নিচে, কয়লা মহাল, চন্ডিবের রাস্তা ও নির্জন স্থানে ছিনতাইয়ের ঘটনা বাড়ছে।
দুই মাস আগেও একই এলাকায় এক কলেজছাত্র ছিনতাইয়ের শিকার হন। তারা দাবি করেন, পুলিশ যদি এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়, তাহলে এমন ঘটনা কমবে।
স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান, একজন ব্যবসায়ী, বলেন,
“আমরা প্রায়ই দেখি ছেলেরা সন্ধ্যার পর মোবাইল চুরি করে পালিয়ে যায়। পুলিশ মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও এসব চক্র আবার সক্রিয় হয়ে পড়ে।”
জনতার সাহসিকতা প্রশংসনীয়
ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে জনতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলা হয়,
“স্থানীয়দের সাহসিকতা ও তৎপরতায় আমরা আজ বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছি। আমরা চাই, এই ধরনের অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।”
Post a Comment