জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব ॥
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় ময়না জাতের বর্ষাকালীন লাউ চাষ করে দেড় মাসেই লক্ষাধিক টাকা আয় করেছেন রাজানগর গ্রামের কৃষক ও ইউপি সদস্য ইউনুছ মিয়া। স্বাদে মিষ্টি ও বিষমুক্ত হওয়ায় বাজারে এ লাউয়ের চাহিদা ও দাম দুই-ই বেশি। ফলন দ্রুত হওয়ায় এবং রোগ-পোকামাকড় দমন পদ্ধতি উন্নত হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যেও ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
১৪ বছর প্রবাসজীবন শেষে দেশে ফিরে কৃষিকাজে মনোনিবেশ করেন ইউনুছ মিয়া। বর্তমানে তিনি বছরজুড়েই ক্ষিরা, বর্ষাকালীন টমেটো এবং বিভিন্ন জাতের লাউ চাষ করেন। গত বছর সিলেটে গ্রাফটিং পদ্ধতির টমেটো ও ময়না লাউ চাষ দেখে আগ্রহী হয়ে নিজ এলাকায় এটি চাষের সিদ্ধান্ত নেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে এবার তিনি দেড় বিঘা জমিতে ময়না জাতের লাউের চাষ শুরু করেন।
চাষ পদ্ধতি ও লাভ
চাষে ইউনুছ মিয়ার খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। কীটনাশকের পরিবর্তে তিনি সেক্সফেরোমেন ফাঁদ ও হলুদ টেপ ব্যবহার করেন, ফলে জমি থাকে বিষমুক্ত। দুই মাসের আগেই তিনি প্রথম দফায় ৮৫ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। তিনি আশাবাদী, মোট বিক্রি দেড় লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় কৃষক কালা মিয়া বলেন, "এবারই প্রথম এ জাতের লাউ আমাদের এলাকায় চাষ হয়েছে। ফলনও বেশি, দামও ভালো—ইউনুছ ভাইয়ের সফলতা দেখে আমরাও উৎসাহিত।"
একজন নারী জানান, “ইউনুছ ভাইয়ের ক্ষেতের লাউ অনেক সুস্বাদু। আমরা তার ক্ষেত থেকেই লাউ কিনে রান্না করি।”
গ্রামের জসিম উদ্দিন বলেন, "অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করেও তিনি ভালো লাভ করছেন, যা এলাকাজুড়ে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।"
কৃষি কর্মকর্তাদের মতামত
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, “আমার পরামর্শে ইউনুছ মিয়া এই লাউ চাষ করেন। কীটনাশক ছাড়াই উৎপাদন হওয়ায় এটি একটি লাভজনক ও স্বাস্থ্যসম্মত ফসল।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, “ময়না জাতের লাউ খুবই সম্ভাবনাময়। বাজারে দাম ভালো এবং ফলনও বেশি হওয়ায় চাষিরা এখন এই জাতের লাউ চাষে ঝুঁকছেন। আগামী মৌসুমে এর চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করছি।”
Post a Comment